খাসিয়াদের পানের জুম দখলের অভিযোগ

পানের জুম দখল করে নির্মিত অস্থায়ী ঘর। রোববার বিকেলে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার বনাখলাপুঞ্জিতে
ছবি: প্রথম আলো

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নের বনাখলাপুঞ্জির তিনটি পানের জুম বহিরাগত লোকজন দখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে পুঞ্জির বাসিন্দা ও ছোটলেখা চা-বাগানের পক্ষ থেকে বড়লেখা থানায় দুটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

চা-বাগান কর্তৃপক্ষ ও পুঞ্জির বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, ছোটলেখা চা-বাগান কর্তৃপক্ষ চা চাষের জন্য ১ হাজার ৯৬৮ একর টিলাভূমি সরকারের কাছ থেকে ইজারা নেয়। পরে তারা ২৭২ একর জমি বার্ষিক ১০ লাখ টাকা মূল্যে খাসিয়াদের কাছে উপ-ইজারা দেয়। ২০০৭ সালে খাসিয়ারা ওই জমিতে বনাখলাপুঞ্জি নামে বসতি স্থাপন করে। এরপর সেখানে পান চাষ শুরু করে। পুঞ্জিতে বর্তমানে ৩৬টি খাসিয়া পরিবারের দেড় শতাধিক সদস্য থাকে। প্রতিটি পরিবারের আলাদা পানের জুম আছে। ২৮ মে বহিরাগত একদল লোক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুঞ্জিতে ঢুকে তিনটি পানের জুমের দখল করে নেন। এ সময় তাঁরা সেখানে একটি অস্থায়ী ঘরও নির্মাণ করেন।

পুঞ্জির নারী মন্ত্রী (পুঞ্জিপ্রধান) নরা ধার ও ছোটলেখা বাগানের প্রধান টিলা করণিক দেওয়ান মাসুদ রোববার থানায় পৃথকভাবে দুটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে ১৬ জনের নাম উল্লেখের পাশাপাশি অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বাড়ি আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়।

পুঞ্জির মন্ত্রী নরা ধার সোমবার সকালে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা নিরীহ মানুষ। পান চাষ করে সংসার চালাই। জুম দখল হওয়ার পর থেকে খুব ভয়ে আছি। আমাদের হুমকি–ধমকি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ বলেছে ব্যবস্থা নেবে।’

ছোটলেখা চা-বাগানের ব্যবস্থাপক শাকিল আহমদ বলেন, স্থানীয় কিছু ভূমিদস্যু চা-বাগানের নামে ইজারাভুক্ত জমি দখল করেছেন। তিনি ব্যক্তিগত কাজে ছুটিতে রয়েছেন। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে তাঁরা উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছেন।

দখলের সঙ্গে যুক্ত হিসেবে নাম আসা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় দক্ষিণ গান্ধাই গ্রামের বাসিন্দা আতিক মিয়া ও লেছই মিয়া। অভিযোগ সম্পর্কে বক্তব্য জানতে তাঁদের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার বলেন, তাঁরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।