খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়: অনশনে গুরুতর অসুস্থ এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মঙ্গলবার রাত থেকে অনশন করছেন। শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনরত দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আজ শনিবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

গুরুতর অসুস্থ হওয়া ওই শিক্ষার্থীর নাম ইমামুল হোসেন। তিনি ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) শিক্ষার্থী। হাসপাতালে নেওয়া হলেও ওই শিক্ষার্থীর জায়গায় জোবায়ের হোসেন নামের একই ডিসিপ্লিনের আরেক শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেছেন।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন তাঁরা। শুক্রবার দুপুর থেকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছিল ইমামুল হোসেনকে।

অনশনরত দুই শিক্ষার্থীর পাশে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা বলছেন, সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ইমামুলের। এ সময় তাঁর বুক ফুলে ওঠে ও তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। এ কারণে তাঁকে সবাই ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। ইমামুল একটু সুস্থ হলেই আবার অনশনস্থলে গিয়ে বসবেন। অনশনরত বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মোবারক হোসেনের অবস্থাও খুব বেশি ভালো নয় বলে জানান তাঁরা।

শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অনশনরত মোহাম্মদ মোবারক হোসেন ওরফে নোমান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকেও স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়।

আজ দিনভর তাঁরা খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকের অপেক্ষায় ছিলেন। কারণ, শুক্রবার মেয়র অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে ব্যাপারটি সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার সারা দিন মেয়র সেখানে যাননি।
শুক্রবার খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করে উপাচার্য বরাবর আবেদন করার অনুরোধ করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর আবেদন করলেও মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেন মেয়রকে। বিকেলের দিকে ওই চিঠিটি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মেয়রের কাছে নিয়ে যান ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র আলী আকবর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, যেহেতু চিঠিতে মাধ্যম হিসেবে মেয়রকে উল্লেখ করা হয়েছে। এ কারণে মেয়রের কাছ থেকে অনুমোদন না নিয়ে আসা পযন্ত ওই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চিঠি আসার পর শৃঙ্খলা বোর্ডের সভা আহ্বান করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি কমানো, আবাসন সংকট নিরসনসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে গত বছর ১ ও ২ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন। অন্যান্য শিক্ষার্থীর সঙ্গে এই দুই শিক্ষার্থীও অংশ নিয়েছিলেন। ওই সময় দুই শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ তোলা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে ওই দুই শিক্ষার্থী দাবি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও প্রহসনমূলক।

আরও পড়ুন