খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনশনরত অপর শিক্ষার্থীও অসুস্থ

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ, ২২ জানুয়ারি
ছবি: সাদ্দাম হোসেন

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনরত অপর শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলামও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা ২টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অনশনরত মোহাম্মদ মোবারক হোসেন ওরফে নোমান অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকেও স্যালাইন দেওয়া হয়।

মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বাংলা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) বহিষ্কারাদেশ পাওয়া শিক্ষার্থী। আর ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের বহিষ্কারাদেশ পাওয়া শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলাম। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেন।

শরীরে স্যালাইন পুশ করেই নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ইমামুল ইসলাম। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘টানা ৬৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকার পর স্যালাইন নিতে বাধ্য হলাম। আমি হাসতে হাসতে মরে যেতে পারি, তবুও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করব না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস হয়ে উঠুক, এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।’
অনশনরত ওই দুই শিক্ষার্থীরা জানান, অসুস্থ হয়ে পড়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ধরনের চিকিৎসা সহায়তা তাঁরা পাননি। এ কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাইরে থেকে চিকিৎসক নিয়ে এসে তাঁদের চিকিৎসা করিয়েছেন।

এদিকে আজ বেলা ১১টার দিকে অনশনরত ওই দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে দেখা করেছেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক। এ সময় তাঁর সঙ্গে কয়েক জন কাউন্সিলরও উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা ওই দুই শিক্ষার্থীকে অনশন ভাঙার অনুরোধ জানান। তবে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত অনশন ভঙ্গ করবেন না বলে মেয়রকে জানিয়ে দেন তাঁরা। পরে মেয়র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে আশ্বাস দেন।

গত বছর ১ ও ২ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করেন। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ, তদন্ত কমিটিকে সহযোগিতা না করাসহ বিভিন্ন কারণে ওই দুই শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড। ওই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে তাঁরা আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করেছেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে শুরু হওয়া অনশন কর্মসূচি এখনো অব্যাহত আছে। এর আগে রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়ে একই স্থানে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছিলেন ওই দুই শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন ও ফি কমানো, আবাসন সংকট নিরসনসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ে শত শত শিক্ষার্থীর সঙ্গে তাঁরাও আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ওই সময় দুই শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণ করার অভিযোগ তোলা হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। তবে ওই দুই শিক্ষার্থী দাবি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও প্রহসনমূলক।