খুলনার চালনায় ভোট বর্জন করলেন বিএনপির প্রার্থী

নির্বাচন কমিশন

খুলনার চালনা পৌরসভা নির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে তাঁর এজেন্টদের বের করে দেওয়া এবং একজনের ভোট অন্যজন দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মো. আবুল খয়ের খান ভোট বর্জন করেছেন। বেলা ১টা ৪৫ মিনিটে বিএনপি প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আবদুল মান্নান দাকোপ উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের এই ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, সকালে ভোট গ্রহণ শুরুর পর আওয়ামী লীগের এজেন্ট ও কর্মী-সমর্থকেরা ধানের শীষের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছেন। বুথে ভোটাররা আঙুলের ছাপ (ফিঙ্গার প্রিন্ট) দেওয়ার পরই ইভিএমের গোপন কক্ষে নৌকার এজেন্টরা তাঁদের জোর করে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল খয়ের খানের উপস্থিত না থাকার বিষয়ে বলা হয়, মো. আবুল খয়ের খান বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ থাকায় খুলনা নগরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রথম থেকে তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় নামেননি।

নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে সনত কুমার বিশ্বাস, বিএনপি থেকে মো. আবুল খয়ের খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল ও গৌতম কুমার রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এর আগে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট মোজাফফর হোসেন বলেন, ‘কয়েকটি কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। এ ছাড়া নানা অনিয়ম করার অভিযোগে আমরা ভোট বর্জন করছি। যেখানে একজন ভোটারও তাঁর ভোট সঠিকভাবে প্রদান করতে পারছেন না। ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার পরে ইভিএমে আওয়ামী লীগের লোকজন ভোট দিয়ে দিচ্ছেন।’

একজন ভোটারও তাঁর ভোট সঠিকভাবে প্রদান করতে পারছেন না। ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার পরে ইভিএমে আওয়ামী লীগের লোকজন ভোট দিয়ে দিচ্ছেন।
মোজাফফর হোসেন, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট

নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে সনত কুমার বিশ্বাস, বিএনপি থেকে মো. আবুল খয়ের খান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অচিন্ত্য কুমার মণ্ডল ও গৌতম কুমার রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

স্বতন্ত্র প্রার্থী অচিন্ত্য কুমার মণ্ডলও ভোটে নানা ধরনের কারচুপির অভিযোগ করেছেন। আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী গৌতম কুমার রায় বলেন, ‘আমার এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে। ভোটারদের সঠিকভাবে ভোট দিতে দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা ভোটারদের আঙুলের ছাপ মেশিনে নেওয়ার পরে গোপন কক্ষে ঢুকে জোর করে মেশিনের বোতাম চেপে ভোট প্রদান করছেন। অভিযোগ করেছি, তবে ভোট বর্জন করব না।’

ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হচ্ছে।
সনত কুমার বিশ্বাস, আওয়ামী লীগের প্রার্থী

তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সনত কুমার বিশ্বাস দাবি করেন, ভোট সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হচ্ছে।

নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দাকোপ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মাহামুদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মৌখিকভাবে শুনেছি বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। বিভিন্ন নির্বাচনের দিনে দ্বিতীয়ার্ধে বিএনপি ভোট বর্জনের এমন কাজ করে। এত সুন্দর, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরও যদি ভোট বর্জন করে, তাহলে করার কিছু নেই।’