খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে ধরপাকড়ের অভিযোগ

বিএনপি

খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আর দুই দিন বাকি। এখনো পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। উল্টো নেতা–কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ নগর বিএনপির। এর মধ্যেই ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এমনকি ২৭ ফেব্রুয়ারি সমাবেশ ও তার আগের দিন পরিবহন বন্ধ রাখার চেষ্টাও চলছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের কে ডি ঘোষ রোড এলাকার দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন খুলনা নগর বিএনপির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন পুলিশের অনুমতির অপেক্ষায় এবং প্রশাসনের সহযোগিতার অপেক্ষায়, তখন পুলিশ নগরের সাতটি থানায় নেতা–কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান এবং গ্রেপ্তার শুরু করেছে।’ তিনি বলেন, সমাবেশের অনুমতি চেয়ে ১৭ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে তাঁরা সমাবেশের সম্ভাব্য চারটি স্থানের কথা উল্লেখ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে শহীদ হাদিস পার্ক, মহারাজ চত্বর, শিববাড়ী মোড় বাবরী চত্বর ও সোনালী ব্যাংকের সামনের জায়গাটি। এসব জায়গায় রাজনৈতিক দলগুলো বড় সমাবেশ করে। সমাবেশের অনুমতি পেতে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সিটি মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আলোচনা করেছে। মেয়র সমাবেশের জন্য আশ্বস্ত করেছিলেন এবং তিনি পুলিশ কমিশনারকে বলেছিলেনও। অথচ এখন পর্যন্ত অনুমতি দেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পুলিশ রাতে বিএনপির নেতা–কর্মীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেপ্তার করেছে। একেক বাড়িতে একাধিকবার যাচ্ছে। বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত খুলনা নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ২৪ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই আটক করা হয়েছে। একজন অসুস্থ থাকায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের একটি থানার গারদে পুরে রাখা হয়েছে।

মহারাজ চত্বরকে সামনে রেখে সমাবেশের ৮০ শতাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, পাঁচ হাজার কর্মী গ্রেপ্তার হলেও খুলনা সমাবেশ করা হবে। গত সংসদ এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সময় খুলনায় ৫৩টি গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ১ হাজার ২০০ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। প্রয়োজনে এবার আরও ২০০ মামলার আসামি হলে কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে সমাবেশের আগের দিন ও সমাবেশের দিন পরিবহন বন্ধ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। পরিবহনশ্রমিকনেতা এবং মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাবেশের আগে খুলনা বিভাগে শুক্রবার থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবহন চলাচলে নিষেধ করা হচ্ছে।

আমরা যখন পুলিশের অনুমতির অপেক্ষায় এবং প্রশাসনের সহযোগিতার অপেক্ষায়, তখন পুলিশ নগরের সাতটি থানায় নেতা–কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে অভিযান এবং গ্রেপ্তার শুরু করেছে।
নজরুল ইসলাম, খুলনা নগর বিএনপির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুল আলম, নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, বিএনপি নেতা জাফরউল্লাহ খান, মীর কায়সেদ আলী, স ম আবদুর রহমান, মনিরুজ্জামান মন্টু, শেখ আবদুর রশিদ, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, শেখ আবু হোসেন, সিরাজুল হক, আসাদুজ্জামান মুরাদ, শেখ সাদী প্রমুখ।

‘সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলের ষড়যন্ত্র ও খালেদা জিয়ার মুক্তি’র দাবিতে দেশের ছয় সিটিতে মেয়র প্রার্থীদের নেতৃত্বে বিভাগীয় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। খুলনায় সমাবেশ হবে শনিবার। ওই মহাসমাবেশে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, নিতাই রায় চোধুরী, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখের। এ ছাড়া ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা বক্তব্য দেন।