খুলনায় বিএনপির মহাসমাবেশ শুরু, কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ

খুলনা নগরের কেডি ঘোষ সড়কে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে দুপুরে পুলিশের অবস্থানপ্রথম আলো

খুলনা নগরের কে ডি ঘোষ সড়কের চারপাশ ঘিরে রেখেছে শত পুলিশ। ওই সড়কেই খুলনা বিএনপির দলীয় কার্যালয় অবস্থিত। সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ওই সড়কসহ আশপাশের বিভিন্ন সড়কে দুই থেকে তিনজনের সমাগম দেখলেই তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে দলীয় কার্যালয়ের সামনে আড়াই হাজারের মতো নেতা–কর্মী জড়ো হয়েছেন।

বিএনপি খুলনা বিভাগীয় মহাসমাবেশ করার জন্য কে ডি ঘোষ সড়ক (মহারাজ সড়ক) ব্যবহারের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ কারণে দলীয় কার্যালয়ের সামনেই সমাবেশ করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। আজ শনিবার বেলা আড়াইটা থেকে ওই সমাবেশ শুরু হয়েছে।

সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি, সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ওই মহাসমাবেশের আয়োজন করেছে খুলনা বিএনপি। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী ও যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।

খুলনা মহনগর পুলিশ (কেএমপি) কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঞা দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপিকে বাইরে কোথাও সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবে তারা কার্যালয়ের মধ্যে সমাবেশ করতে পারবে।
সমাবেশ ঘিরে মহানগরের প্রায় সব থানার পুলিশকে কার্যালয়ের সামনে মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েকটি থানার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তাঁরা বলেন, বিএনপির সমাবেশের ডিউটিতে রয়েছেন। কেএমপি ঊর্ধ্বতন প্রায় সব কর্মকর্তাকেই সেখানে ডিউটি দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া সমাবেশস্থলে পুলিশের সাঁজোয়া যান ও জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পুলিশের ওই ব্যারিকেড ভেদ করে বিএনপির নেতা–কর্মীরা কেউ কার্যালয়ের দিকে যেতে পারছেন না।

খুলনা নগরের কেডি ঘোষ সড়কে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে আজ দুপুরে নেতা–কর্মীরা স্লোগান দেন
প্রথম আলো

কেএমপির সদর থানার পাশেই বিএনপির দলীয় কার্যালয় অবস্থিত। ওই থানা সড়কসহ পিকচার প্যালেস সড়কের সব দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। লোক নিয়ে কোনো ইজিবাইক বা সিএনজি শহরের মধ্যে ঢুকতে পারছে না। এ ছাড়া সকাল থেকে খুলনা নগরে ঢোকার সব পথ অনেকটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টা থেকে আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খুলনা থেকে ১৮টি রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেয় বাস মালিক সমিতি।

দুপুরের পর দলীয় কার্যালয়ের সামনে যশোর, চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এর আগে কার্যালয়ের সামনে জোহরের নামাজ আদায় করেন নেতা-কর্মীরা।

খুলনা নগর বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ‘একাধিকবার সমাবেশের অনুমতি চেয়েছি, সিটি মেয়রের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শহীদ হাদিস পার্কটি চাওয়া হয়েছিল। তিনি সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু সহযোগিতা পাইনি।’

নজরুল ইসলাম মঞ্জু আরও বলেন, খুলনায় দেশের অন্যতম বড় একটি দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে না পারা দেশবাসীর কাছে খুলনাবাসীর জন্য লজ্জার।

নগর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক শামসুজ্জামান চঞ্চল বলেন, কেন্দ্রীয় নেতারা দলীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছেছেন। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা যেসব হোটেলে অবস্থানের কথা ছিল, সকালে সেসব হোটেল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এ জন্য তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান নেন। খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি যৌথভাবে এ মহাসমাবেশের আয়োজন করছে।