খেলার মাঠে বসছে গরুর হাট, উচ্ছেদের দাবি

শেরপুরের নালিতাবাড়ীর কাকরকান্দি বাজারে খেলার মাঠে সাপ্তাহিক গরুর হাট বসানোর জন্য ইজারা দিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ।
প্রথম আলো

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কাকরকান্দি বাজারের খেলার মাঠে সাপ্তাহিক গরুর হাট বসানোর জন্য ইজারা দিয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ। তবে স্থানীয় নয়টি ক্রীড়া সংগঠনের খেলোয়াড়েরা এ হাট সরানোর দাবি জানিয়েছেন। গত সোমবার তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা গেছে, কাকরকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে মাঠটির ইজারা পেয়েছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আবু হানিফ। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে মাঠটি ইজারা দেওয়া হয়।

লিখিত অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাকরকান্দি বাজারে অবস্থিত ১ একর ৩৫ শতাংশের জমি নিয়ে একটি খেলার মাঠ রয়েছে। এই মাঠে প্রতিবছর বিভিন্ন ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্ট হয়। মাঠে প্রতিদিন স্থানীয় এসএম স্পোর্টিং ক্লাব, বেনুপাড়া-কাকরকান্দি স্পোর্টিং ক্লাব, শেখ রাসেল স্মৃতি সংঘ, ঐক্য স্পোর্টিং ক্লাব, বনলতা স্পোর্টিং ক্লাব, মিতালী স্পোর্টিং ক্লাব, শহীদ তোফাজ্জল হোসেন স্মৃতি সংসদ, ফুটন্ত স্পোর্টিং ক্লাব ও স্বাধীন বাংলা স্পোর্টিং ক্লাবের খেলোয়াড়েরা অনুশীলন করেন।

এ ছাড়া মাঠকে কেন্দ্র করে মোফাজ্জল হোসেন স্মৃতি পাঠাগার, ডিজিটাল পোস্ট অফিস, শহীদ মিনার, কাকরকান্দি মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ, শহীদ আলী হোসেন স্মৃতি সংগীত একাডেমি ও শহীদ মোফাজ্জল স্মৃতি সংঘ রয়েছে।

কয়েকজন খেলোয়াড় বলেন, ১৫ দিন আগে স্থানীয় ৯টি সংগঠনের তরুণেরা স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ভরাট করেন এবং কয়েক দিন পানি ছিটিয়ে রোলার দিয়ে মাঠটিকে সংস্কার করেন। এখন সাপ্তাহিক বাজার হিসেবে প্রতি বুধবার এই খেলার মাঠে গরুর হাট বসে। মাঠে খুঁটি পুঁতে রাখা হয়। গোবর থাকায় মাঠের পরিবেশ নষ্ট হয়ে পড়ে। এ ছাড়া মাঠের পূর্ব পাশের জায়গাজুড়ে প্রতিদিন বিকেলে কাঁচাবাজার বসে। এতে মাঠে খেলার উপযোগী কোনো পরিবেশ থাকে না।

এই খেলার মাঠে বাজার না বসাতে নয়টি সংগঠনের পক্ষ থেকে কাকরকান্দি ও বরুয়াজানি গ্রামের সব মানুষের কাছ থেকে মাঠটি রক্ষায় গণস্বাক্ষর নেওয়া হয়। পরে সোমবার এই অভিযোগ ইউএনওর কাছে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে সরকারি আমিন নিয়ে গিয়ে ইউএনও খেলার মাঠটি মাপজোখ করেন।

এ অবস্থায় গত বুধবার বাজারের ইজারাদার যুবলীগ নেতা আবু হানিফ পুনরায় সেই মাঠে গরুর হাট বসান। এ সময় স্থানীয় তরুণেরা প্রতিবাদ করলে তাঁদের সঙ্গে ইজারাদারের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। মাঠকে কেন্দ্র করে যেকোনো বড় সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর।

এসএম স্পোর্টিং ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি। মাঠটি থেকে সব প্রকার বাজার উচ্ছেদ করা হোক।’

যুবলীগ নেতা আবু হানিফ বলেন, মাঠটিতে সপ্তাহে এক দিন বাজার বসে। আর ছয় দিন কিন্তু খেলা যায়। চলতি বছর তিনি ১৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকায় বাজার ইজারা নিয়েছেন। মাঠ ছাড়া তো গরুর বাজার বসানোর আর কোনো জায়গা নেই।

কাকরকান্দি ইউপির চেয়ারম্যান শহিদ উল্লাহ তালুকদার বলেন, বিকল্প কোনো জায়গা না থাকায় সপ্তাহে একটা দিন মাঠে বাজার বসবে।

ইউএনও মাহফুজুল আলম বলেন, তিনি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত মাঠ থেকে গরুর বাজার স্থানান্তরের ব্যবস্থা নেবেন।