খেলোয়াড় হওয়াই তাদের স্বপ্ন

সকাল থেকেই মাঠে জড়ো হতে শুরু করেছে ছাত্রীরা। গায়ে তাদের নানা রঙের জার্সি। নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ এসেছে সামনে। খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্ন পূরণের বাধা পার হতে হবে। বাইরে রাস্তার ধারে অপেক্ষা করছে তাদের শিক্ষক, কোচ ও অভিভাবক। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালের এই চিত্র দিনাজপুরের বাঁশের হাট এলাকায় বিকেএসপির মাঠে।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি) প্রমীলা ক্রীড়া উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অঞ্চলভিত্তিক নারী খেলোয়াড় বাছাই কর্মসূচির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর অধীনে সারা দেশে পর্যায়ক্রমে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি ও আর্চারি বিভাগে বাছাই করা ২০০ খেলোয়াড় নিয়ে দুই বছর মেয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হবে। এর অংশ হিসেবে গতকাল দিনাজপুরের বাঁশের হাট এলাকায় বিকেএসপির মাঠে খেলোয়াড় বাছাই শুরু হয়েছে।

এই কার্যক্রমে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিকেএসপির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) কর্নেল এ কে এম মাজহারুল হক, পিবিজিএমএস অধ্যক্ষ বিকেএসপি লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, দিনাজপুর আঞ্চলিক ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপপরিচালক আখিনুর জামান প্রমুখ।

সকাল নয়টা থেকে বিকেল পর্যন্ত এই বাছাই কার্যক্রম চলে। মাঠের পশ্চিম প্রান্তে আর্চারি বিভাগের বাছাই। পূর্বে ফুটবল, দক্ষিণে হকি খেলা। ইনডোরে ক্রিকেটার বাছাইপর্ব। মেডিকেলসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর চূড়ান্ত বাছাইপর্বে অংশ নেয় তারা। আট জেলা থেকে প্রাথমিক বাছাইপর্বে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। চূড়ান্ত বাছাইয়ে ফুটবলে ১৪৫ জন, ক্রিকেটে ৫৪ জন, হকিতে ৩৯ জন এবং আর্চারি বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ২৪ জন খেলোয়াড়।

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলা থেকে মেয়েকে নিয়ে এসেছেন স্কুলশিক্ষিকা আরজিনা আক্তার। জানালেন, এর আগে দুবার বিকেএসপিতে ক্রিকেট বিভাগে বাছাইপর্বে অংশ নিয়েছে তার নবম শ্রেণিপড়ুয়া মেয়ে। প্রাথমিকভাবে উত্তীর্ণও হয়।

কিন্তু ঢাকায় গিয়ে বাদ পড়ে। তবে হাল ছাড়েনি তাঁর মেয়ে। এবারও বাছাইয়ে অংশ নিয়েছে। তিনি বলেন, সাকিব আল হাসানের মতো ক্রিকেটার হতে চায় তাঁর মেয়ে। মেয়ের স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করছেন তাঁরা।

দিনাজপুর বিকেএসপির উপপরিচালক আখিনুর জামান জানান, প্রথম পর্যায়ে সারা দেশ থেকে ৪০০ জনকে বাছাই করা হবে। তাদের ২টি ভাগে ভাগ করে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সেখান থেকে ২০০ জনকে বাছাই করে দেড় বছর ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

আখিনুর জামান আরও বলেন, ‘এবারই প্রথম এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের কিছু খেলোয়াড় পাব।’