‘খ্যাতা দিয়া শীত মানে না, কম্বলডা দিয়া রাতে শান্তিতে ঘুমাবার পামু’

প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া কম্বল পেলেন দুই শতাধিক শীতার্ত নারী–পুরুষ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার পলাশগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠেপ্রথম আলো

ক্রাচে ভর করে কম্বল নিতে এসেছিলেন আজগর আলী (৪৯)। দুর্ঘটনার কারণে তাঁর বাঁ পা কেটে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি পুরো সময় ঘরে বসেই কাটান। একটি টিনশেড ঘর। কিন্তু রাতে ঘরের ভেতর চারপাশ দিয়ে বাতাস ঢোকে। এতে শীতে তিনি খুব কষ্ট করছিলেন। কম্বল পেয়ে তিনি খুব উপকৃত হলেন বলে জানালেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার পলাশগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রথম আলো বন্ধুসভা ২০০ জন শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করে। প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া ওই কম্বল পেয়ে বেজায় খুশি শীতার্ত মানুষেরা। তাঁদের মধ্য থেকে বৃদ্ধা মেহরন বেগম বলেন, ‘রাতে শীতে জাড় করে। ছেঁড়া খ্যাতা দিয়ে থাকি। জাড় মানে না। খ্যাতার নিচে কম্বল দিয়া রাতে ঘুমামু। একটু শান্তিতে ঘুমাবার পামু।’ তাঁর মতো একই রকম অনুভূতি ব্যক্ত করলেন বৃদ্ধা খরবালা বেগম, ছামিরন বেগম, নূর জাহান, শমলা বেগম ও অবিরন বেগমও।

কম্বল বিতরণের জন্য দুই দিন ধরে সদর উপজেলার ছোট্টগর ও পলাশগড় গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে দরিদ্রদের মধ্যে স্লিপ বিলি করেন জামালপুর বন্ধুসভার সদস্যরা।

শীতে কষ্ট করে রাত কাটাচ্ছিলেন। প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া কম্বল পেয়ে দারুণ খুশি এই বৃদ্ধ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার পলাশগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে
প্রথম আলো

পলাশগড় গ্রামের অমেলা বেগম বলেন, ‘গরিব মানুষ। দুইটা পুলা। ওগোরেই চলে না। আমরারে কিছুই দেয় না। মানষের বাড়িতে কাজকর্ম করেই চলি। এই শীতের মধ্যে খ্যাতা ছাড়া কিছুই নাই। এডা খ্যাতা দিয়ে শীত মানে না। রাতে কত কষ্ট করি। এই কম্বলডা দিয়া রাতে শান্তিতে ঘুমাবার পামু।’

ছোট্টগর গ্রামের বৃদ্ধ আমজাদ হোসেন বলেন, ‘বুড়া মানুষগোরে শীত বেশি। রাতে শীতে ঘুমাবার পাই না। খ্যাতা দিয়া উম হয় না। খ্যাতাও ছেঁড়া। কত কষ্ট কইর‌্যা শীতে থাকি। এই কম্বলডা পাইলাম খুশি হইলাম।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া কম্বল নিয়ে বাড়ি ফিরছেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুর সদর উপজেলার পলাশগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে
প্রথম আলো

কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর জামালপুর প্রতিনিধি আব্দুল আজিজ, জামালপুর বন্ধুসভার সভাপতি সিফাত আবদুল্লাহ, সহসভাপতি মাসুদ রানা ও আল হাদী, সাধারণ সম্পাদক মহাইমিনুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, অর্থ সম্পাদক মুক্তা খাতুন, সমাজকল্যাণ সম্পাদক অনামিকা সরকার, পাঠচক্র সম্পাদক মুন তানিম আলম, যোগাযোগ সম্পাদক আফরা আক্তার, প্রশিক্ষণ সম্পাদক আনান শেখ, সাহিত্য সম্পাদক নিজামুল করিম, পাঠাগার সম্পাদক আরিফ হোসেন, সদস্য সুমাইয়া সুমি, শারমিন সাথী, নাসিমা খাতুন, সাজ্জাদ হোসেন, রাসেল মিয়া, ইয়াসমিন সরকার, স্বপন ইসলাম ও শাহনেওয়াজ।

শীতার্তদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসতে পারেন আপনিও। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংকের মাধ্যমে। হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ত্রাণ তহবিল, হিসাব নম্বর: ২০৭ ২০০ ১১১৯৪ ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।