গতি আর অসাবধানতা কেড়ে নিল চার প্রাণ

টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ছাড়ার পর থেকেই চালক তাঁর আসনের পাশে বসে থাকা দুই ব্যক্তির সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় দ্রুতগতিতে চলছিল বাসটি। ঘটনাস্থলে আসার পর বাসটি পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী ভ্যানকে চাপা দেয়। একপর্যায়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি কালভার্টের রেলিং ভেঙে সড়কের পাশের খালে উল্টে পড়ে।

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খালে পড়ে যাওয়ার পর ভিড় করেন স্থানীয়রা। শনিবার সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার মালেক বাজারে
প্রথম আলো

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ঢাকাগামী দোলা পরিবহনের যাত্রীবাহী বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সেটি খালে পড়ে ৪ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টুঙ্গিপাড়ার মালেক বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত লোকজনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও টুঙ্গিপাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আর গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক জানে আলম জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালান। ঘটনাস্থলে একজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারী গ্রামের সঞ্জিত ধর (৪০), টুঙ্গিপাড়ার বড় ডুমুরিয়া গ্রামের কৃষ্ণ কীর্তনীয়া (৩২), নিলফা গ্রামের আকাম উদ্দিন মোল্লা (৫৫) ও বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার বাকপুর গ্রামের ঠান্ডা মিয়া (৫২)।

প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তি ও দোলা পরিবহনের যাত্রী সোহাগ খান (৩২) বলেন, সকালে বাসটি পিরোজপুর থেকে ছেড়ে আসে এবং টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড থেকে সকাল সোয়া ১০টার দিকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়। বাস ছাড়ার পর থেকেই চালক তাঁর আসনের পাশে বসে থাকা দুই ব্যক্তির সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় দ্রুতগতিতে চলছিল বাসটি। ঘটনাস্থলে আসার পর বাসটি পেছন থেকে যাত্রীবাহী একটি ভ্যানকে চাপা দেয়। একপর্যায়ে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে বাসটি কালভার্টের রেলিং ভেঙে সড়কের পাশের খালে উল্টে পড়ে।

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, বেলা ১১টার দিকে আহত লোকজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের মধ্যে হাসপাতালে আনার আগেই ৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। বাকিদের হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম বলেন, যে ভ্যানটিকে বাসটি চাপা দিয়েছিল নিহত লোকজনের মধ্যে সে ভ্যানের চালকও আছেন। আহতদের মধ্যে যশোর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতিকুল ইসলাম (৪৮) ছাড়াও টুঙ্গিপাড়া, মুকসুদপুর ও পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার কয়েকজন বাসিন্দা আছেন। আহত ছয়জনের পরিচয় জানা যায়নি।