গলাচিপায় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা নিয়ে ভাঙচুর
পটুয়াখালীর গলাচিপায় উপজেলা ছাত্রলীগের পুরোনো কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি মিছিলসহ আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার সন্ধ্যায় এই ঘটনার পর গলাচিপা পৌর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক বছরের জন্য সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের গলাচিপা উপজেলা শাখা কমিটি গঠন করা হয়। শরিফ আহমেদ আশিবকে সভাপতি ও জাহিদ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১২ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ কমিটির অনুমতি নিয়ে বুধবার পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়। নতুন কমিটিতে সভাপতি কামরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রনি খানসহ ২২ সদস্যের কমিটিকে অনুমোদন দেয় জেলা ছাত্রলীগ। সকাল ১১টায় গলাচিপায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কমিটি ঘোষণা করার পর বিকেলে পুরোনো কমিটির সভাপতি শরিফ আহমেদের নেতৃত্বে উপজেলা শহরে নতুন কমিটি অবৈধ দাবি করে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়। অন্যদিকে নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে পাল্টা মিছিল করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এই উত্তেজনার জেরে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
বিকেলে উপজেলা শহরের টিঅ্যান্ডটি সড়কে একটি ঘরে সংবাদ সম্মেলন করেন বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি শরিফ আহম্মেদ আশিব। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সদস্যরা অর্থের বিনিময়ে বৈধ কমিটি থাকার পরও সম্মেলন ছাড়াই একটি কমিটি ঘোষণা করিয়েছে। উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এই কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপর সন্ধ্যায় দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হন। সেখানে দুই পক্ষের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
নতুন কমিটির সভাপতি মো. কামরুল ইসলাম বলেন, জেলা ছাত্রলীগ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে নতুন কমিটি আশা করেছিলেন। নতুন কমিটিকে সহযোগিতা করার পরিবর্তে তাঁরা বিরোধিতা করছেন।
কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা টিটো বলেন, ছাত্রলীগ নামধারী কয়েকজন ভাঙচুর চালিয়েছেন। তাঁরা জামায়াত-বিএনপির এজেন্ট। তাঁদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঘটনাটি শুনেছেন বলে জানান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান সিকদার। তিনি বলেন, যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিস্থিতি মোকাবিলায় শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন। তিনি বলেন, ভাঙচুরের অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।