গাংনী পৌর মেয়র বসালেন তরমুজের দোকান

সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায্য দামে তরমুজ পৌঁছে দিতে তরমুজের দোকান বসালেন মেহেরপুরের গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। বগুড়া থেকে তরমুজ আনিয়ে গাংনী বাজারে মাত্র ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করছেন তিনি
সংগৃহীত

সাধারণ মানুষের কাছে ন্যায্য দামে তরমুজ পৌঁছে দিতে দফায় দফায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন মেহেরপুরের গাংনী পৌর মেয়র আহম্মেদ আলী। এরপরও চলতি রমজান মাসে বাজারে তরমুজের দাম সহনীয় মাত্রায় রাখতে না পেরে শেষে নিজেই একটি তরমুজের দোকান বসালেন মেয়র। গাংনী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সকাল ৯টা থেকে পৌরসভার নিয়ন্ত্রণে দোকানটি বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার মেয়রের এ ঘোষণার পর পৌরবাসীর মধ্যে তরমুজ নিয়ে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে।

গাংনী পৌরসভার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, লকডাউন ও পবিত্র রমজান মাসের শুরু থেকে গাংনী বাজারে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা বেশি দামে তরমুজ বিক্রি করে ক্রেতাদের ঠকাচ্ছিলেন। বাজারে তরমুজ কিনতে এসে নাভিশ্বাস ফেলতে হয়েছে ক্রেতাদের। বেশ কিছুদিন থেকেই তরমুজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে ক্রেতাদের ক্ষোভ ও অভিযোগে কথা উঠে আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পৌর মেয়র উদ্যোগ নিয়ে একটি তরমুজের দোকান বসিয়েছেন গাংনী বাজারে। মাত্র ৪০ টাকা কেজিদরে তরমুজ বিক্রি করছেন তিনি। এতে মানুষের প্রশংসা পাচ্ছেন তিনি।

পৌর কর্মকর্তা টিক্কা বিশ্বাস বলেন, তরমুজের দামের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে গাংনী পৌর মেয়র সোমবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু দাম কমাতে নারাজ ব্যবসায়ীরা। ৬০ টাকা কেজির নিচে তাঁরা বিক্রি করতে রাজি হননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে পৌর মেয়য় নিজেই উদ্যোগ নিয়ে বগুড়া থেকে একটি ট্রাকে করে তরমুজ এনে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি শুরু করেন। ৪০ টাকা কেজিদরে তরমুজ কিনতে ভিড় জমান বিভিন্ন এলাকার মানুষ।

আমরা সবাই ক্রেতা। আমার পৌরসভার একটি মানুষও যাতে ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রতারিত না হন, সে বিষয়ে আমরা দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করছি।
আহম্মেদ আলী, গাংনী পৌর মেয়র

গাংনী বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহে তরমুজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গাংনীতে সিন্ডিকেট করে দাম বৃদ্ধি করা হয়। পৌর মেয়রের এ ধরনের উদ্যোগে গাংনী পৌরবাসী ছাড়াও সব মানুষ স্বল্পমূল্যে তরমুজ কিনতে পারছেন।

কাঁচাবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাহাজুল ইসলাম বলেন, বাজারের ব্যবসায়ীদের একটি নীতিমালার মধ্যে সব পণ্য বিক্রির তাগিদ রয়েছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট অনিয়ন্ত্রিত বাজার তৈরিতে ভূমিকা রাখছে। পৌর মেয়রের এ ধরনের উদ্যোগে ক্ষণিক সময়ের জন্য সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। তবে দীর্ঘদিন যদি উপকারের কথা ভাবতে হয়, তবে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

মেয়র আহম্মেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গাংনীতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে কোনো সিন্ডিকেট থাকবে না। তরমুজের পাশাপাশি মাংসের বাজারেও পৌরসভার পক্ষ থেকে নজরদারি থাকবে। আমরা সবাই ক্রেতা। আমার পৌরসভার একটি মানুষও যাতে ব্যবসায়ীদের দ্বারা প্রতারিত না হন, সে বিষয়ে আমরা দৃঢ়তা ও সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করছি।’