গাইবান্ধায় ঝড়ে আহত আরও দুজনের মৃত্যু, মৃত বেড়ে ১০

কালবৈশাখী ঝড়ে রোববার বিকেলে গাইবান্ধা শহরের গোরস্থান রোডে গাছ পড়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধায় কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙে পড়া গাছ ও ডালের নিচে চাপা পড়ে আহত এক নারীসহ আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ঝড়ে মৃতের সংখ্যা শিশুসহ ১০। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে জেলা প্রশাসনের মিডিয়া সেল ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) পাঠানো মৃত্যুর প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

এদিকে আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত গাইবান্ধা শহরের মহিলা এতিমখানা এলাকা ও জেলা শহরের আশপাশের এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু হয়নি।

সর্বশেষ রোববার রাত নয়টার দিকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সদর উপজেলার বাসুদেবপুর গ্রামের আরজিনা খাতুন (২৮) মারা যান। আর আহত অবস্থায় মারা গেছেন ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি গ্রামের হাফেজ উদ্দিন (৪৪) নামের এক ব্যক্তি। নিহত ১০ জনের মধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলার ৪ জন, পলাশবাড়ীর ৩, ফুলছড়ির ২ ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ১ জন রয়েছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার বাদিয়াখালি ইউনিয়নের সরকারতারি গ্রামের জোসনা রানী (৬০), হরিনসিংহা তিনগাছের তল গ্রামের মিয়া (৫), আরিফ খাঁ বাসুদেবপুর গ্রামের আরজিনা (২৮), মালিবাড়ি ইউনিয়নের ধনধনি গ্রামের সাহারা বেগম (৪০), পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের ডাকেরপাড়া গ্রামের জাহানারা বেগম (৫০), একই ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের গোফ্ফার মিয়া (৪২) ও মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামের মমতা বেগম (৫৫), ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের শিমুলি আকতার (২৭), এরেন্ডাবাড়ি ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর গ্রামের হাফেজ উদ্দিন (৪৪) ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত হলদিয়া গ্রামেন ময়না বেগম (৪০)।

গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিন বলেন, জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঝড়ে গাছ ভেঙে ও চাপা পড়ে এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পাশাপাশি নিহত প্রতিটি পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়ছে।

গতকাল রোববার কালবৈশাখী ঝড়ে গাইবান্ধার চারটি উপজেলার ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বৈদ্যুতিক লাইন লন্ডভন্ড হয়ে যায়। আজ সোমবার সকাল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা নিজ উদ্যোগে ভেঙে যাওয়া ঘরবাড়ি মেরামত কাজ শুরু করেছেন। যেসব গাছ ভেঙে রাস্তায় পড়েছিল, সেগুলো পরিষ্কার করা হয়েছে। বৈদ্যুতিক লাইনের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় রোববার বেলা তিনটা থেকে জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রাত ১১টার দিকে জেলা শহরের বেশির ভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়। কিন্তু আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত গাইবান্ধা শহরের মহিলা এতিমখানা এলাকায় বিদ্যুৎ আসেনি। পাশাপাশি জেলা শহরের আশপাশের এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ–সংযোগ চালু হয়নি। ফলে ফ্রিজের সংরক্ষিত জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে হচ্ছে।

এ বিষয়ে আজ সকালে গাইবান্ধা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-১–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুল মোন্নাফ বলেন, রোববার রাতে শহর এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সচল করার জন্য মেরামতের কাজ চলছে।