গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, হুমকিতে বাঁধ
গাইবান্ধা জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ঘাঘট ও করতোয়া নদ–নদীর তীরবর্তী গাইবান্ধার ৪টি উপজেলার ২৬টি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে এসব ইউনিয়নের ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ৯ ঘণ্টায় করতোয়া নদীর পানি ৩৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এই একই সময়ে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদের পানি স্থিতিশীল ছিল। আর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ১১৮ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদের পানি বিপৎসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে তিস্তা নদীর পানি কমছে।
গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ৩ হাজার ৮৬ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ভেসে গেছে পুকুর ও প্রকল্পের মাছ। বন্যাকবলিত এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সড়কপথে যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, এখনো কোথাও কোনো বাঁধ ভেঙে যায়নি। যেখানেই সমস্যা দেখা দিচ্ছে জরুরিভাবে বস্তা ও জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ মেরামত করা হচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার থেকে পানি কমা শুরু হবে।
গতকাল বুধবার ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের ভাষারপাড়া এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ চুঁইয়ে পানি অপর পাড়ে যাওয়ায় বাঁধে গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে বাঁধের পশ্চিম পাশের ৩০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন, পাউবো, ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় জনসাধারণ সম্মিলিতভাবে বাঁধ রক্ষার কাজে নেমে পড়েন। জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মতিনের উপস্থিতিতে দিনভর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঁধটি তাৎক্ষণিক ভাঙন থেকে রক্ষা করা হয়। কিন্তু এখনো ওই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।