সিলেটের মালনীছড়া ছড়ার এক পাশ উন্মুক্ত ছিল। দখল ঠেকাতে এলাকাবাসী সেখানে কিছু গাছ লাগিয়েছিলেন। সেসব গাছের ২২টি বড় হয়ে গেছে। সম্প্রতি সিলেট সিটি করপোরেশন সেখানে ‘ওয়াকওয়ে’ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে গাছগুলো কাটা পড়তে পারে বলে শঙ্কা ছিল এলাকাবাসীর। তাই গাছ বাঁচিয়ে রাখতে ওয়াকওয়ের নকশায় পরিবর্তন এনেছে সিটি করপোরেশন।
ওয়াকওয়ে নির্মাণ পরিকল্পনার প্রথম ধাপের কাজ শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ। সরেজমিনে দেখা গেছে, মালনীছড়া থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার এঁকেবেঁকে ছড়াটি সুরমা নদীতে মিলিত হয়েছে। মধ্যবর্তী অংশ সাগর দিঘিরপাড়। সিলেটের ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশ দিয়ে প্রবহমান ছড়ার এক কিলোমিটার অংশে নির্মাণ করা হচ্ছে ওই ওয়াকওয়ে (হাঁটার পথ)।
প্রথম ধাপে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে ৭৮০ ফুট দীর্ঘ ওয়াকওয়ে হচ্ছে। এই ৭৮০ ফুট অংশে পড়েছে ২২টি গাছ। এর মধ্যে দুটি গাছ ওয়াকওয়ের মধ্যে পড়েছে। সেগুলো অক্ষত রাখা হবে। আর বাকি গাছ রক্ষায় ওয়াকওয়ে কিছুটা বাঁকানো হয়েছে। এতে ওয়াকওয়ের পুরোটা বৃক্ষছায়ার মধ্যে পড়েছে।
নির্মাণ তদারককারী সিটি করপোরেশনের সহকারী প্রকৌশলী অংশুমান ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ওয়াকওয়ে প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে অপরিকল্পিতভাবে লাগানো গাছ কাটার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু গাছগুলো কাটা হলে ওয়াকওয়েতে কোনো ছায়া থাকবে না বলে প্রকৌশল বিভাগ যোগাযোগ করে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগে। ছড়ার তীর পরিদর্শন করে স্থপতি শুভজিৎ চৌধুরী গাছগুলো বাঁচিয়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণের নতুন নকশা দেন। এই নকশাতেই তৈরি হচ্ছে এখন ওয়াকওয়ে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, এর আগে সিটি করপোরেশনের অনেক উন্নয়নকাজে বৃক্ষনিধন হয়েছে। এ নিয়ে নাগরিক প্রতিবাদও হয়েছে। ইচ্ছা থাকলে যে উপায় হয়, তারই একটি দৃষ্টান্ত এ ওয়াকওয়ে প্রকল্প।