‘গাছবন্ধু’ মিজানুর গড়তে চান সবুজ পৃথিবী

২০০৬ সাল থেকে এ পর্যন্ত সোয়া লাখ গাছের চারা রোপণ করেছেন হাতীবান্ধার মিজানুর রহমান। তিনি পেশায় কৃষক।

হাতীবান্ধার দক্ষিণ সিন্দুর্না তিস্তা নদীর ঘাট সড়কের দুই ধারে নানা জাতের গাছ লাগিয়েছেন মিজানুর রহমান
প্রথম আলো

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্না গ্রামের তিস্তাঘাট রোড থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মোড় পর্যন্ত বিভিন্ন জাতের ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছের সারি। ১৫ বছর বয়সী এসব গাছে বিভিন্ন মৌসুমে ফুল ও ফল ধরে। গাছের নিচ দিয়ে পথচলার সময় কানে ভেসে আসে পাখির ডাক।

২০০৬ সালে এ সড়কে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন সিন্দুর্না গ্রামের মিজানুর রহমান (৩৮)। ১৫ বছর ধরে তিনি বিভিন্ন স্থানে গাছ রোপণ করে স্থানীয় মানুষের কাছে গাছবন্ধু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। মিজানুরের দাবি, তাঁর রোপণ করা গাছের সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার।

বিএ পাস মিজানুর রহমান পেশায় কৃষক। দুই সন্তানের জনক তিনি। বাবা নুরুল হক গাছের চারা বিতরণ ও রোপণের কাজে তাঁকে উৎসাহ দিয়েছিলেন।

সিন্দুর্না গ্রামে নিজ বাড়িতে সাত শতক জমির ওপর ‘সবুজ পৃথিবী বাঁচাও’ নামে একটি নার্সারি আছে মিজানুরের। তাঁর এমন কাজের স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর প্রথম আলোর ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে মিজানুরকে সম্মাননা দেয় বন্ধুসভা।

মিজানুর রহমান বলেন, ২০০৬ সাল থেকে নিজ খরচে গাছের চারা রোপণ ও বিতরণ শুরু করেন। মানুষ তাঁকে দেখলে গাছবন্ধু বলে ডাকেন। এটাই সম্মান ও স্বীকৃতি।

২০০৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত হাতীবান্ধা উপজেলার শিঙ্গিমারী, সিন্দুর্না, টংভাঙা, পাটিকাপাড়া, ভেলাগুড়ি, গোতামারী ও গড্ডিমারী, কালীগঞ্জের দলগ্রাম, পাটগ্রামের দহগ্রাম–আঙ্গরপোতায় গাছের চারা রোপণ করেছেন মিজানুর। এ ছাড়া পাশের জেলা নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের চত্বরেও তিনি গাছ লাগিয়েছেন।

মিজানুর রহমান বলেন, নিজের আয় ও টিউশনির টাকার একাংশ দিয়ে তিনি গাছ কেনেন। কখনো কখনো কাছের আত্মীয়স্বজনও গাছের চারা দিয়ে সহযোগিতা করেন। মিজানুরের স্ত্রী জিন্নাত রোকসানা বলেন, এর সঙ্গে তাঁরাও জড়িয়ে গেছেন।