গাজীপুরে গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ, আটক ৩

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার রূপনগর এলাকায় নিজের ঘর থেকে আজ বুধবার দুপুরে সুবর্ণা আক্তার (২১) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁকে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও ননদকে আটক করা হয়েছে।

নিহত সুবর্ণার পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ মাস আগে সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার চিলগাছা এলাকার শুকুর আলীর মেয়ে সুবর্ণা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে একই এলাকার নাজিম উদ্দিনের ছেলে ইউনুস আলীর বিয়ে হয়। এরপর স্বামী-স্ত্রী দুজনে কালিয়াকৈরের রূপনগর এলাকার হাফিজ উল্লাহর বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। ইউনুস আলী উপজেলার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ইকোটেক্স পোশাক কারখানায় কাজ করেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই স্বামী-স্ত্রী দুজনের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল মঙ্গলবার রাতেও তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। প্রতিদিনের মতো আজ ভোরে ইউনুস আলী বাসা থেকে বের হয়ে তাঁর কর্মস্থলে যান। সকাল আটটার দিকে তাঁর ননদ নাসরিন বেগম তাঁকে ডাকতে গেলে কোনো সাড়াশব্দ পান না। তাঁর (নাসরিন) দাবি, ঘরের দরজা ধাক্কা দিয়ে দেখতে পান সুবর্ণা আক্তার গলায় রশি দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছেন। পরে বোনের ফোন পেয়ে ভাই ইউনুস আলী বাসায় আসেন। পরে ভাইবোন মিলে ওই গৃহবধূর লাশটি মাটিতে নামান। বিষয়টি টের পেয়ে ওই বাসার কেয়ারটেকার সন্তোষ মীর মৃধা কালিয়াকৈর থানা–পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিজের ঘর থেকে গৃহবধূ সুবর্ণা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নিহত সুবর্ণার লাশ গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

তবে সুবর্ণার মা ঝর্ণা বেগম ও বড় বোন সুমি আক্তার অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পর থেকেই সুবর্ণাকে ইউনুস বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতেন। গত রাতেও তাঁকে নির্যাতন করেন তাঁর স্বামী। পারিবারিক কলহের জেরেই সুবর্ণাকে হত্যার পর তাঁকে ঝুলিয়ে রেখেছেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

সুবর্ণাকে হত্যার অভিযোগে তাঁর স্বামী ইউনুস আলী, শ্বশুর নাজিম উদ্দিন ও ননদ নাসরিনকে আটক করেছে পুলিশ।

কালিয়াকৈর থানা–পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শামসুদ্দোহা জানান, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা, ময়নাতদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুবর্ণার স্বামী, শ্বশুর ও ননদকে আটক করা হয়েছে।