গাড়ি ও মানুষের চাপ কমে দৌলতদিয়া ঘাট ফাঁকা

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে ভোরে যানবাহন ও মানুষের চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ফাঁকা হয়ে যায়। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে।
ছবি: এম রাশেদুল হক

করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে সারা দেশে কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে। জরুরি, রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া সাধারণ কোনো গাড়ি, মানুষ চলাচলে বিধিনিষেধ রয়েছে।

বিধিনিষেধ উপেক্ষা করেই শুক্রবার ভোর থেকে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের পাশাপাশি মানুষের ভিড় থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন বা মানুষের চাপ কমতে থাকায় বেলা ১১টার পর দৌলতদিয়া ঘাট অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। এখন জরুরি গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার হচ্ছে। সঙ্গে বিপাকে পড়ে আসা কিছু মানুষ পারাপার হচ্ছে। এ ছাড়া সকাল ছয়টার পর থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে সব লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আরও পড়ুন

শুক্রবার ভোর থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার নদী পাড়ি দিতে আসা ঢাকামুখী বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের লম্বা লাইন। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে যানবাহনের লাইন গোয়ালন্দ বাজার বাসস্ট্যান্ড ছাড়িয়ে সাত কিলোমিটার লম্বা হয়। ছোট-বড় ১৬টি ফেরি নিয়মিত চলায় রাতভর পারাপারে গাড়ির চাপ কমতে থাকে। ঘাটে আসা দূরপাল্লার নৈশ কোচ শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত পাড়ি দেয়। ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, সঙ্গে অসংখ্য মানুষও আজ সকালে পারাপার হয়। বেলা ১১টার পর যানবাহনের চাপ কমে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ফাঁকা হতে থাকে। ফেরিঘাটে মানুষের ভিড়ও কমে অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়।

লঞ্চঘাট মোড় এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী কামাল হোসেন বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত মহাসড়কে ফেরিঘাট এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা লাইনে যাত্রীবাহী পরিবহন, পণ্যবাহীসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় থাকে। বিকল্প সড়কের ৫ নম্বর ঘাট সংযোগ সড়কে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় লম্বা লাইন দেয়। বেলা ১০টার পর থেকে মহাসড়ক ফাঁকা হতে থাকে। ফেরিঘাটেও মানুষের ভিড় কমতে থাকে। বেলা ১১টার দিকে ঘাট এলাকায় তেমন যানবাহন বা মানুষের চাপ নেই বললেই চলে। দুপুরের দিকে হয়তো আরও ফাঁকা হয়ে যাবে।

এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রফিকুল ইসলাম এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর নেতৃত্বে ঘাটসহ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে উপজেলা প্রশাসন ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা–পুলিশকে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

ওসি মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পুলিশ বিশেষ দায়িত্ব পালন করছে। করোনা সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধ যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করা হচ্ছে। খুবই জরুরি কাজে বাইরে আসা ব্যক্তিদের বাদে বাকি সবাইকে বুঝিয়ে–শুনিয়ে নিজ বাড়িতে পাঠানোর চেষ্টা করছি।’

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শিহাব উদ্দিন বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত সার্বক্ষণিক ১৪টি ফেরি দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে আটকে থাকা গাড়ি পারাপার করে। এখন উভয় ঘাটে গাড়ির চাপ না থাকায় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে পাটুরিয়ায় ছয়টি রো রো ও তিনটি ইউটিলিটি এবং দৌলতদিয়ায় তিনটি রো রো ও তিনটি ইউটিলিটি ফেরি রাখা হয়েছে। একটিমাত্র কেটাইপ ফেরি ভিআইপি পারাপারের ক্ষেত্রে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রশাসনের চেকপোস্ট অতিক্রম করে আসা গাড়ি ফেরিতে পারাপার হবে। এ ছাড়া যাত্রী পারাপারে নিষেধ রয়েছে।