‘গায়েবি’ মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেন ১০ জন

পৌর নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

যশোরের ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচনের আগে পুলিশের করা ‘গায়েবি’ মামলায় ৩ কাউন্সিলর প্রার্থীসহ ১০ জনকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এ এস এম আবদুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ তাঁদের ছয় সপ্তাহের জামিন মঞ্জুর করেন।

জানতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী কে বি রুমী বলেন, ঝিকরগাছা থানা-পুলিশের করা একটি মামলায় ৩ প্রার্থীসহ ১০ জনের ৬ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ। জামিনের আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে যশোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিদের আত্মসমর্পণ করতে হবে।

জামিনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন ঝিকরগাছা পৌরসভার তিনটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী। তাঁরা হলেন ঝিকরগাছা পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আরমান হোসেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মশিয়ার রহমান এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মতিয়ার রহমান। এ ছাড়া অপর আটজন হলেন কাউন্সিলর প্রার্থী আরমান হোসেনের ভাই আরাফাত কল্লোল, ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মনিরুজ্জামানের দুই ভাই তৌহিদুজ্জামান ও এম ডব্লিউ রায়হান, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো. শাহজাহান, পৌর যুবদলের সদস্য শামীম হোসেন, পৌর ছাত্রদলের সদস্য মো. আজিম ও বিএনপির কর্মী ইউনুচ আলী।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৩১ ডিসেম্বর ঝিকরগাছা উপজেলার পায়রাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ‘থার্টিফাস্ট নাইট’ (ইংরেজি নববর্ষ) উপলক্ষে বিএনপির কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতা-কর্মী ও দুষ্কৃতকারী ধ্বংসাত্মক ও সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য একত্র হয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এমন অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। ঝিকরগাছা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সিরাজুল ইসলাম ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরও ৬০ থেকে ৭০ জনকে আসামি করে ওই মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত তিনজনকে ওই রাতেই গ্রেপ্তার করে পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

আরও পড়ুন

এজাহারে নাম উল্লেখ করা ৩৪ জনের মধ্যে ১১ জন ঝিকরগাছা পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী। তাঁদের সবাই বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে ১০ জন আজ উচ্চ আদালত থেকে দেড় মাসের জামিন পেয়েছেন।

জামিন পেয়ে আরাফাত কল্লোল বলেন, ‘নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে নাশকতার নাটক সাজিয়ে গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপির প্রার্থী ও নেতা-কর্মীদের ফাঁসিয়ে দিয়েছে। মামলায় আসামি করা নির্দোষ নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি এখন প্রতি রাতেই পুলিশ হানা দিচ্ছে। যে কারণে আমরা কেউ এলাকায় থাকতে পারছি না।’

আওয়ামী লীগের এক বিদ্রোহী প্রার্থী সরে দাঁড়ালেন

ঝিকরগাছা পৌরসভার নির্বাচন ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান হাসান সামাদ কম্পিউটার প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন। এ ছাড়া মনোনয়নবঞ্চিত হয়ে আওয়ামী লীগের পাঁচজন বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন।

বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম আজ দুপুরে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা আনোয়ার পাশাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তবে ২৭ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিনেও প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করায় নির্বাচনী ব্যালট পেপারে তাঁর নাম ও প্রতীক যুক্ত থাকবে বলে জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলামসহ অন্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।