গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগ

প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা পৌর এলাকার বিশারাবাড়ী এলাকা থেকে বিয়ের ৯ মাস পর শনিবার দুপুরে ইয়াসমিন আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের বাবার দাবি, তাঁর মেয়েকে যৌতুকের জন্য খুন করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পুলিশ বলছে, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলেই জানা যাবে, এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কসবা পৌর শহরের বিশারাবাড়ী এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে সৌদিপ্রবাসী সাইফুল ইসলাম ছুটিতে বেড়াতে এসেছিলেন। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লার বাঙ্গরা থানার সীমানার পাড় গ্রামের আবদুল আউয়াল মিয়ার মেয়ে ইয়াসমিন আক্তারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। করোনার কারণে ছুটি শেষ হলে সাইফুল সৌদি যেতে পারেননি। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্নভাবে ইয়াসমিনকে নির্যাতন করা হতো। এ নিয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে একাধিকবার সালিসও হয়।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার সকালেও স্বামী সাইফুল ও শাশুড়ি শেফালী বেগমের সঙ্গে ইয়াসমিনের ঝগড়া হয়েছে। দুপুরে খবর আসে ইয়াসমিন তাঁর কক্ষের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করেছেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘরের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। এ সময় গৃহবধূর স্বামী, শাশুড়ি ও পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়ি ছেলে পালিয়ে যান।

ইয়াসমিনের বাবা আউয়াল মিয়া বলেন, ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন মেয়ের জামাই সাইফুল ইসলাম। গত শুক্রবার মেয়ে ইয়াসমিন ফোনে জানান, যৌতুকের জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে বেধড়ক পিটিয়েছে। টাকা না দিলে রাতে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। একটা ব্যবস্থা করে তাঁকে বাঁচানোর জন্য আকুতিও জানান ইয়াসমিন। শনিবার সকালে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানান, তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। তিনি বলেন, যৌতুকের টাকার জন্য তাঁরা তাঁর মেয়েকে মেরে ফেলেছেন।

কসবা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, মেয়েটিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করেছিলেন। পরে দরজা বন্ধ করা অবস্থায় ভেতর থেকে ফ্যানে ঝোলানো ইয়াসমিন আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, নিহতের পরিবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ কারণে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে লাশটির ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তে প্রতিবেদন অনুসারে মামলা গ্রহণ করা হবে।