গৃহবধূর শরীর ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় শাশুড়ি ও দেবর গ্রেপ্তার

হাতকড়া
প্রতীকী ছবি

রংপুরের কোতোয়ালি থানার হরিপুর বালাচড়া গ্রামে গরম পানি ঢেলে গৃহবধূ মোখলেছিনা বেগমের শরীর ঝলসে দেওয়ার ঘটনায় করা মামলায় তাঁর শাশুড়ি ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে বাড়ি থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে রংপুর কোতোয়ালি থানা-পুলিশ।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন গৃহবধূর শাশুড়ি জেলেখা বেগম ও তাঁর দেবর জিয়াদুল ইসলাম। এর আগে বুধবার সন্ধ্যায় রংপুর কোতোয়ালি থানায় ভুক্তভোগী পুত্রবধূ মোখলেছিনা বেগম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এহসানুল কবীর আজ দুপুরে মুঠোফোনে জানান, গ্রেপ্তার দুজনকে আজ সকালে আদালতের মাধ্যমে রংপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে বাড়ির বারান্দায় মোখলেছিনা বেগমের একটি গরু রাখাকে কেন্দ্র করে শাশুড়ি জেলেখা বেগম ঝগড়া করেন। একপর্যায়ে দেবর ও শাশুড়ি মিলে মোখলেছিনাকে মারধর করে পেছন দিক থেকে গরম পানি মাথায় ঢেলে দেন। এতে তাঁর মাথা, ঘাড় ও গলা পুড়ে ঝলসে যায় এবং দগদগে ঘায়ের সৃষ্টি হয়।

আজ দুপুরে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে মোখলেছিনাকে হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখা যায়। এ সময় তিনি বলেন, ‘খুব যন্ত্রণা করছে। রাতে ঘুমাতে পারি না। গরম পানি পড়ায় বাঁ চোখে এখন ঝাপসা দেখছি।’

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক নাজমুল হুসাইন বলেন, পোড়া ঘায়ের যন্ত্রণা অনেক। সেরে উঠতে সময় লাগবে।

এজাহারে মোখলেছিনা উল্লেখ করেন, মাত্র ১১ বছর বয়সে বধূবেশে স্বামীর বাড়িতে পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। প্রথম দিনে মাছ কাটতে না পারার কারণে শাশুড়ি তাঁকে মেরেছিলেন। এরপর থেকে প্রায় দিনেই কারণে-অকারণে শাশুড়ি জেলেখা বেগম, দেবর জিয়াদুল ইসলাম ও জা মরিয়ম বেগম তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন। ভয়ে এসবের প্রতিবাদ করতেন না স্বামী। সংসারের কথা ভেবে সব সহ্য করে যেতেন মোখলেছিনা। পরে নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দুই সন্তানকে মা-বাবার কাছে রেখে স্বামী তাঁকে নিয়ে ঢাকায় চলে যান। সেখানে ৯ বছর অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করেছেন মোখলেছিনা। স্বামী ছিলেন নির্মাণশ্রমিক। করোনা শুরুর পর তিনি ঢাকা থেকে স্বামীর বাড়িতে ফিরে এলেও স্বামী ফেরেননি।

দগ্ধ মোখলেছিনা বেগমের বাবার বাড়ি বদরগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ বাওচণ্ডী ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা মতিয়ার রহমান একজন বর্গাচাষি।

আরও পড়ুন