গোপন কক্ষে ঢুকে ইভিএমের বোতাম চাপছিলেন যুবলীগ নেতা

বগুড়া জেলার মানচিত্র
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার সারিয়াকান্দির বটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টার দিকে ভোট দিতে গোপন কক্ষে যান এক ভোটার। ১২টা ৪০ মিনিটে সেখানে পরিদর্শনে আসেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিষ্কৃতি হাগিদক। সন্দেহ হওয়ায় গোপন কক্ষে যান তিনি। দেখেন, ভোটারের উপস্থিতিতেই ইভিএমের বোতাম চেপে ভোটারের ভোট দিয়ে দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর এক এজেন্ট।  

আজ শনিবার বিকেলে ওই কেন্দ্রে গেলে প্রতিবেদকের কাছে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই এই বর্ণনা দেন। ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ওই এজেন্টের নাম শাহাদত হোসেন। গোপন কক্ষে ঢোকা ও কেন্দ্রের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার দুটি অপরাধে তাঁকে ছয় মাস করে মোট এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহাদত আগে উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। বর্তমানে তিনি পৌর যুবলীগের নেতা। তবে তাঁর পদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে পৌর এলাকার পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে তিনজন ভোটারের দেখা পাওয়া যায় যাঁরা কয়েক দফায় চেষ্টা করেও ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিতে পারেননি।

কয়েক দফায় চেষ্টা করেও আঙুলের ছাপ মেলেনি শহিদুল ইসলাম ও হাসান প্রমাণিকের। আজ শনিবার সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে
প্রথম আলো

এই ভোটাররা হলেন কুঠিবাড়ি এলাকার ফরিদা বেগম (৬৯), শহিদুল ইসলাম (৬৪) ও হাসান প্রামাণিক (৭০)। তাঁরা জানান, তাঁদের মতো আরেক ভোটার ভোট দিতে না পেরে বাড়ি ফিরে গেছেন।

ওই তিনজন ভোটার বলেন, আঙুলের ছাপ না মেলায় সকালের দিকে তাঁরা প্রথম দফায় ভোট দিতে ব্যর্থ হন। তখন কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম তাঁদের দুপুরের পর আবার কেন্দ্রে আসতে বলেন। দুপুরের পর গিয়েও তাঁরা ভোট দিতে ব্যর্থ হন।

প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, যাঁদের আঙুলের ছাপ মিলছে না, তাঁদের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। কয়েক দফায় চেষ্টা করেও কাজ হয়নি।

আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয় বিকেল চারটায়। তবে বিকেল সোয়া চারটার দিকেও কেন্দ্রে অবস্থান করায় ভোট নেওয়া হয় ভোটারদের। তাঁদের মধ্যে ছিলেন কয়েক দফায় আঙুলের ছাপ না মেলা ফরিদা বেগমও। তিনি বলেন, সকাল থেকে চারবার লাইনে দাঁড়ান তিনি। প্রতিবারই ভোট দিতে ব্যর্থ হন।

কেন্দ্রটির প্রিসাইডিং কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৩৮৫ জন। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট পড়ে ৬৫ শতাংশ।