গোয়ালন্দে পদ্মায় ভাঙন, দৌলতদিয়ার ১ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ

ভাঙন ঠেকাতে পদ্মায় বালুভর্তি ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। দৌলতদিয়ার ১ নম্বর ফেরিঘাট, গোয়ালন্দ, ১ অক্টোবর। ছবি: এম রাশেদুল হক।
ভাঙন ঠেকাতে পদ্মায় বালুভর্তি ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। দৌলতদিয়ার ১ নম্বর ফেরিঘাট, গোয়ালন্দ, ১ অক্টোবর। ছবি: এম রাশেদুল হক।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদীর ভাঙন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ভাঙনঝুঁকিতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়ার ১ নম্বর ফেরিঘাট বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ভাঙন ঠেকাতে আজ মঙ্গলবার দুপুর থেকে পদ্মার পাড়ে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলছে।

সরেজমিনে আজ দেখা যায়, দৌলতদিয়ার ১ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুন রেকারের সাহায্যে টেনে রাখা হয়েছে। পন্টুনের ওপর থেকে বালুভর্তি বস্তা নদীতে ফেলা হচ্ছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা কাজের তদারকি করছেন। অন্য পন্টুনের মাথায় স্রোতের প্রচণ্ড ঘূর্ণিপাক থাকায় ওই স্থান দিয়ে নৌ–চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ঘাটের পশ্চিমে মাত্র ৬০০ ফুট দূরে একটি বড় চর ছিল। সেটা কয়েক দিনের ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে। এ কারণে পানির তীব্র স্রোত সরাসরি ১ নম্বর ফেরিঘাটে আঘাত হানছে।

১ নম্বর ফেরিঘাটের পন্টুনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সারেং মো. শাহজাহান বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে নদীতে পানি বাড়ছে। নদীতে তীব্র স্রোত দেখা দিয়েছে। স্রোতের গতি দিন দিন বেড়ে যাওয়ায় এক সপ্তাহ ধরে ১ নম্বর ঘাটে ফেরি সহজে ভিড়তে পারছে না। দিন দিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। ফেরিঘাট ভাঙন থেকে রক্ষা ও পন্টুন ধরে রাখার জন্য সোমবার দুপুর ১২টার দিকে থেকে পন্টুনটি রেকার দিয়ে টেনে রাখা হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, দৌলতদিয়ার ছয়টি ঘাটের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে ১ নম্বর ফেরিঘাট। ঘাটের সামনে থাকা চর ও গ্রামের বেশ কিছু ঘরবাড়ি বিলীন হওয়ায় সরাসরি পানি ঘাটে আঘাত হানছে। বেশি ঝুঁকি থাকায় সোমবার দুপুরেই ঘাটটি বন্ধ করে দিয়ে পন্টুনটি রেকারের সাহায্যে টেনে রাখা হয়েছে।

মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ২ নম্বর ঘাটটিও ঝুঁকিতে আছে। ১ নম্বর ঘাটটি ভেঙে গেলে ২ নম্বর ঘাটটি ঝুঁকিতে পড়বে। তবে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বা জরুরি ভিত্তিতে ঘাট স্থানান্তর করতে বিআইডব্লিউটিএ প্রস্তুত আছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবায়েত হায়াত শিপলু বলেন, ঘাটসংলগ্ন এলাকায় দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ মুহূর্তে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট রক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পদ্মার তীরবর্তী গ্রামে ভাঙন ঠেকানোর মতো ব্যবস্থা পাউবোর নেই বলে তারা অপারগতা প্রকাশ করেছে। তবে ফেরিঘাটের ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পাউবোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পাউবো গোয়ালন্দের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আরিফ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ১ নম্বর ফেরি ঘাট রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে ৬ হাজার বালুভর্তি বস্তা ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ভাঙন শেষ না হওয়া পর্যন্ত জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলতে থাকবে।