গোয়ালন্দের ওসির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসির বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সংবাদ সম্মেলন। লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনাচ্ছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ। আজ দুপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতিকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এ দাবি করেন।

গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির নাম মো. নজরুল ইসলাম। তিনি গত পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন। আর ওসির নাম আশিকুর রহমান।

গোয়ালন্দ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির নাম মো. নজরুল ইসলাম। তিনি গত পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন। আর ওসির নাম আশিকুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, নজরুল ইসলামকে জনসমক্ষে হেয় করতে এবং আসন্ন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীকে সুবিধা করে দেওয়ার হীন মানসিকতায় ওসি আশিকুর তাঁকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন। উপজেলা, পৌর আওয়ামী লীগসহ এর সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।

নজরুল ইসলামকে জনসমক্ষে হেয় করতে এবং আসন্ন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীকে সুবিধা করে দেওয়ার হীন মানসিকতায় ওসি আশিকুর তাঁকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন।
বিপ্লব ঘোষ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগ

আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব ঘোষ লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পুলিশ সুপারের (এসপি) নেতৃত্বে সম্প্রতি দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার গোয়ালন্দের দৌলতদিয়ায় অবৈধ কাজ ও চাঁদাবাজি বন্ধ হয়। কিন্তু গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান দৌলতদিয়ায় ফলের ট্রাক, গরুর ট্রাকসহ পণ্যবাহী ট্রাক থেকে নিষিদ্ধ সর্বহারা পার্টির সন্ত্রাসীদের দিয়ে চাঁদাবাজিসহ অবৈধভাবে অর্থ আদায় করে চলেছেন। এ ছাড়া তিনি আসন্ন উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষ অবলম্বন করায় দলীয়ভাবে প্রতিবাদ করে আসছেন।

এসব কারণে বদলির আদেশ পাওয়া ওসি আশিকুর গতকাল বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে দুটি পিকআপ ভর্তি পুলিশ নিয়ে পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলামের শহরের বাসায় ২ ঘণ্টা অবস্থান করেন। এ সময় নজরুল ইসলাম বাসায় ছিলেন না। খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ পৌর আওয়ামী লীগ, এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সেখানে যান। সে সময় নেতা-কর্মীরা পুলিশের উপস্থিতির বিষয় জানতে চাইলে ওসি যৌক্তিক কারণ দেখাতে পারেননি। নেতা-কর্মীদের প্রতিবাদের মুখে ওসি চলে যাওয়ার সময় নজরুল ইসলামকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সম্প্রতি ওসি আশিকুরের বদলির আদেশ আসায় গত মঙ্গলবার তিনি দৌলতদিয়ার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের দিয়ে বদলির আদেশ ঠেকাতে কথিত মানববন্ধনের ব্যবস্থা করেন। এ অবস্থায় তাঁরা ওসির বদলির আদেশ দ্রুত কার্যকরের দাবি জানান।

নজরুল ইসলামের লাইসেন্স করা একটি শটগান রয়েছে। সেটার খোঁজখবর নিতে বাসায় গেলে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান।
আশিকুর রহমান, ওসি, গোয়ালন্দ ঘাট থানা

জানতে চাইলে ওসি আশিকুর রহমান বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে গতকাল দুপুরে তিনি নজরুল ইসলামের বাসায় যান। সেখানে নজরুল ইসলাম তাঁদের দীর্ঘক্ষণ বাসার নিচতলায় অপেক্ষায় রাখেন। নজরুল ইসলামের লাইসেন্স করা একটি শটগান রয়েছে। সেটার খোঁজখবর নিতে বাসায় গেলে তিনি কৌশলে পালিয়ে যান।

ওসি আরও বলেন, ‘দৌলতদিয়া ঘাটে সন্ত্রাসীদের দিয়ে ফল ও গরুর ট্রাক থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ সত্য নয়, বরং নজরুল ইসলামের ভাই মোস্তফা মণ্ডল এ ধরনের কাজ করতেন, যা আমি বন্ধ করে দিয়েছি।’

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য মো. নুরুজ্জামান মিয়া।

এতে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মোস্তফা মুন্সী, সহসভাপতি গোলজার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও ফকীর আমজাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির উদ্দিন, পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম, ছোটভাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ছাত্রলীগের সভাপতি তুহিন দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবির হোসেন প্রমুখ।