গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে ভয় দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পোশাকে চা– পাতার দোকানে তল্লাশি চালায় কিছু ব্যক্তি।
ছবি: সিটি ফুটেজ থেকে সংগৃহীত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যদের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর নাম নারায়ণ সূত্রধর। তিনি শহরের সাগরদীঘি সড়কের চা–পাতা বিক্রির দোকান ‘পূর্বা টি সাপ্লাই’র মালিক।

নারায়ণ সূত্রধর আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর জেলা গোয়েন্দা শাখার ছয়-সাতজন তাঁর দোকানে এসে দোকানের ভেতরে ও গুদামে ঢুকে তল্লাশি চালান। তাঁরা অবৈধ ও ভেজাল চা–পাতা থাকার অভিযোগে এনে দোকান সিলগালা করার হুমকি দেন ও তাঁকে তাঁদের গাড়িতে উঠতে বলেন। এ সময় ডিবির সদস্যরা তাঁর কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে বলেন, ‘আপনার দোকানে প্রায় ২০ লাখ টাকার চা–পাতা আছে। দোকান সিলগালা করলে ও আপনাকে ধরে নিয়ে গেলে আপনার বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’ এতে তিনি ভয় পেয়ে তাঁর পরিচিত চা–পাতা ব্যবসায়ী জামাল মিয়াকে দোকানে ডাকেন। জামাল মিয়ার মধ্যস্থতায় এক লাখ টাকা অন্য জনের কাছ এনে তাঁদের দেন।

বিষয়টি মৌলভীবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমি ঘটনাটি শুনেছি। আমি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় এ ধরনের কোনো ঘটনা কোনো ডিবি পুলিশ করতে পারেনি। আমি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’

শ্রীমঙ্গল পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মীর এম এ সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শনিবার সকালে তাঁকে বিষয়টি জানিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে কাউকে হুমকি দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

ভুক্তভোগী নারায়ণ সূত্রধর বলেন, ‘আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ছয়-সাতজনের ডিবি পুলিশের একটি দল ঢুকে কর্মচারীদের মোবাইল কেড়ে নেয়। পাশাপাশি তারা আমার মোবাইলও নিয়ে নেয় ও জোরপূর্বক আমার দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে।’ ভয়ে দুদিন বিষয়টি নিয়ে কোথাও অভিযোগ দেননি বলে দাবি করেন তিনি।

সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত জামাল টি হাউসের স্বত্বাধিকারী জামাল মিয়া বলেন, ডিবি সদস্যরা ১০ লাখ টাকা না দেওয়ায় নারায়ণকে প্রথমে গাড়িতে তুলে নিতে চায়। পরে দর–কষাকষি করে এক লাখ টাকা পাওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়।

দোকানটির সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ডিবি পুলিশের পোশাক পরা সাত সদস্যের একটি দল দোকানে ঢুকেছে। এরপর তারা চা–পাতার গুদামে প্রবেশ করছে। সেখানে তল্লাশি চালানোর একপর্যায়ে সিসি ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়।