গৌরনদীতে খাবারে বিষ মিশিয়ে ১১টি গরু হত্যা

বরিশালের গৌরনদীতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা একটি গরুর খামারে খাবারে বিষ মিশিয়ে ১১টি গরু হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারি ইয়াকুব ফকির (৩৫)। ১১টি গরু হত্যায় তাঁর প্রায় ২৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।

আজ সোমবার সন্ধ্যার পর উপজেলার গেরাকুল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ও খামারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইয়াকুব ফকির তিন-চারটি অস্ট্রেলিয়ান গরু নিয়ে নিজ বাড়িতে একটি গরুর খামার শুরু করেছিলেন। ক্রমে খামার বড় হওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে ইয়াকুব ফকিরের সংসার ভালোভাবেই চলছিল। বর্তমানে তাঁর খামারে ১৬টি অস্ট্রেলিয়ান গরু রয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকা। খামারের তদারককারী মানিক হোসেন (৫২) জানান, আজ সন্ধ্যার পরে পর্যায়ক্রমে ১১টি গরুকে খামারে খড়কুটার খাবার দেওয়া হয়। খাবার খেয়ে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে সুস্থ–সবল বড় গরুগুলো একে একে দাপাতে দাপাতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। প্রতিটিই পেট ফুলে উঠে মারা যায়। খাবার খাওয়ার পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে গরু মারা গেছে। এভাবে আধা ঘণ্টার মধ্যে ১১টি গরু মারা যায়।

আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ১১টি গরু মারা যাওয়ায় প্রায় ২৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি কী দিয়ে ঋণ শোধ করব, আর কী দিয়া সংসার চালাব?
ইয়াকুব ফকির, খামারের মালিক

প্রতিবেশীরা জানান, খামার দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত মানিকের চিৎকার শুনে তাঁরা ছুটে এসে গরুগুলো মারা যাওয়ার দৃশ্য দেখতে পান। দ্রুত তাঁরা উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগকে খবর দেন। গৌরনদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের ভেটেরিনারি সার্জন মাসুম বিল্লাহ জানান, গরুগুলো কোনো রোগে মারা যায়নি। খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মারা গেছে।

খামারের মালিক ইয়াকুব ফকির (৩৫) বলেন, ‘শত্রুতা করে আমার সঙ্গে এই কাজ কেউ করতে পারে, তা আমার ধারণার বাইরে। কিন্তু যেহেতু বিষযুক্ত খাবার খেয়ে বিষক্রিয়ায় গরুগুলো মারা গেছে, সেহেতু শত্রুপক্ষই যে এই কাজ করেছে তাতে কোনো ভুল নাই।’ কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ১১টি গরু মারা যাওয়ায় প্রায় ২৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি কী দিয়ে ঋণ শোধ করব, আর কী দিয়া সংসার চালাব?’

গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. তৌহিদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।