গৌরীপুরে পাল্টাপাল্টি মামলায় মেয়র ও সাংসদপুত্র আসামি

ময়মনসিংহ জেলার মানচিত্র

ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ও ওই আসনের সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিমউদ্দিন আহমেদের ছেলে তানজির আহমেদের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার দুই পক্ষই পৃথক দুটি মামলা করেছে। একটি মামলায় মেয়র নিজে বাদী হয়ে সাংসদপুত্র তানজির আহমেদকে প্রধান আসামি করেছেন। অপর মামলাটির বাদী তানজিরের সমর্থক মোস্তাফিজুর রহমান। এ মামলায় মেয়রকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।

গত রোববার গৌরীপুর পৌর শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় মেয়র ও সাংসদের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এতে দুই পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন। ঘটনার পর দুই পক্ষই সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের ওপর হামলার অভিযোগ করে প্রতিপক্ষকে দায়ী করে। মেয়র রফিকুল ইসলাম নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে তানজিরের নির্দেশে গুলি করা হয়। তবে তিনি গুলিবিদ্ধ হননি। অপর দিকে একই দিন সংবাদ সম্মেলন করে সাংসদ নাজিম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঐতিহাসিক ৭ মার্চের অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় মেয়রের লোকেরা সাংসদের গাড়িবহরে হামলা করেন। হামলার সময় সাংসদের গাড়ি ওই এলাকা অতিক্রম করে গেলেও তাঁর ছেলে ও ছেলের সমর্থকেরা মেয়রের লোকদের হামলার শিকার হন।

গত রোববার গৌরীপুর পৌর শহরের বাস টার্মিনাল এলাকায় মেয়র ও সাংসদের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। ঘটনার পর আজ দুই পক্ষই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করল।

আজ গৌরীপুর থানায় মামলা করেন মেয়র রফিকুল ইসলাম। এ মামলায় তানজিরকে প্রধান আসামি করে মোট ১৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়। তানজিরের সমর্থক মোস্তাফিজুরের মামলায় মেয়র সৈয়দ রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে মোট ৪২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।

গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান আবদুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, পুলিশ দুটি মামলারই তদন্ত করছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও একাধিক আওয়ামী লীগ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের ১৭ অক্টোবর গৌরীপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমানকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। মেয়রকে এ মামলায় আসামি করা হলে তিনি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কার হন। পরে তিনি ৩০ জানুয়ারির পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন রফিকুল ইসলাম। ওই নির্বাচনে তানজির আহমেদ আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় সাংসদ ও তানজিরের সঙ্গে মেয়রের চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিরোধের জেরে গত রোববার দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।