গ্রামের মেলায় জুয়া খেলতে বাধা দেওয়ায় স্কুলছাত্র খুন

খুন
প্রতীকী ছবি

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে জুয়া খেলতে বাধা দেওয়ায় দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে এক স্কুলছাত্র খুন হয়েছে। নিহত ওই ছাত্রের নাম আবদুল্লাহ আল আকাশ (১৬)। তার বাড়ি উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পিরিজপুর গ্রামে। সে কটিয়াদী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

স্থানীয় লোকজন জানান, দক্ষিণ পিরিজপুর গ্রামে ইনছাফ আলীর মেলা নামে একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাটি হয় এক সপ্তাহব্যাপী। দুই দিন আগে মেলাটি শুরু হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে মেলায় জুয়া খেলা হচ্ছিল। তখন রাত একটা। বিষয়টি আকাশের নজরে আসে। তখন আকাশ বাধা দেয়। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে কয়েকজন আকাশকে ছুরিকাঘাত করতে থাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় আকাশকে বাজিতপুরে অবস্থিত জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই আকাশের মৃত্যু হয়।

হামলার সময় আকাশকে বাঁচাতে একই গ্রামের ইদ্রিস মিয়ার ছেলে সজিন মিয়া (১৯) এগিয়ে যান। তখন তিনি হামলার শিকার হন। সজিন বর্তমানে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর লোকজন সুমন মিয়া (২৫) নামের এক ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে দিয়েছেন। সুমন উপজেলার সরারচর ইউনিয়নের কৈকুড়ী গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় আকাশের বাবা এরশাদ মিয়া বাদী হয়ে বাজিতপুর থানায় হত্যা মামলা করেছে।

এরশাদ মিয়া বলেন, ‘আমার ছেলে স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থীর একজন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা তার একটি নেশা। জুয়া খেলা দেখে প্রতিবাদ করে। এ কারণে প্রতিপক্ষের ক্ষোভের শিকার হতে হয়।’

হামলায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু

এদিকে উপজেলার কৈলাগ ইউনিয়নের কুকরারাই সিরাজনগর গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ওই ব্যক্তির নাম আল–আমিন (৩৬)। তিনি কুকরারাই সিরাজনগর গ্রামে মৃত দ্বীন ইসলামের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আল আমিনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের জারমনি গ্রামের আতর মিয়ার বিরোধ ছিল। ৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আতর মিয়ার লোকজন ধাঁরালো অস্ত্র নিয়ে আল–আমিনের ওপর হামলা চালায়। গুরুতর আহত অবস্থায় আল–আমিনকে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যান।

এ ঘটনায় আল–আমিনের মা জামেনা আক্তার বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশ সেলিম মিয়া (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। সেলিম একই ইউনিয়নের জারমনি গ্রামের মৃত মতি মিয়ার ছেলে।

বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, দুটি খুনের ঘটনায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইনছাফ আলীর মেলাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।