পিতৃহারা আশরাফুল ইসলামের (২৬) সম্বল বলতে একটি শোবার ঘর। সম্প্রতি বেড়া সরিয়ে টিন দিয়েছিলেন। দুই কক্ষের ঘরের সবটুকুতে দিতে পারেনি, এখনো অনেকটা বেড়া রয়েছে। আশরাফুলের সেই ঘরটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘরের চারদিকে এখন শুধুই ধারালো অস্ত্রের কোপের চিহ্ন। সামাজিক বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষরা আশরাফুলের চাচাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ঘরটি নষ্ট করেছে।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নাকোল গ্রামে বাড়ি আশরাফুলের। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বেতন ছাড়া কাজ করেন তিনি। আশরাফুলের দাবি, তিনি কোনো ঝামেলায় থাকেন না, এরপরও চাচাদের প্রতিপক্ষরা তাঁর একমাত্র আশ্রয়স্থলটি কুপিয়ে কেটে দিল।
গত বৃহস্পতিবার দুর্বৃত্তরা আশরাফুলের ঘরটিতে হামলা চালায়। এ সময় তিনি ভয়ে পালিয়ে যান। শুধু আশরাফুল ইসলাম নয়, ওই দিন আরও কয়েকজনের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তাঁরা হলেন গ্রামের গোলাম রসুল, রফিকুল ও হামিদুল ইসলাম।
আশরাফুল ইসলামের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, তাঁর ছেলের কোনো অপরাধ নেই। ছেলের বয়স যখন মাত্র ২ বছর, তখন ওর বাবা মারা যান। খেয়ে না–খেয়ে ছেলেকে বড় করেছেন। একটু ভালো থাকার আশায় ছেলে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করে ঘরটিতে টিনের বেড়া দেয়। সে ঘরটিও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কেটে দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, নাকোল গ্রামে সামাজিক দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে নায়েব আলী নামে একজনকে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি একটি জমিতে বেড়া দেওয়া নিয়ে আবার দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারপর ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
নাকোল গ্রামের বাসিন্দা মামুন বিশ্বাস বলেন, গ্রামের বাড়িঘর ভাঙচুর ও কুপিয়ে আহত করার ঘটনায় ১৮ জনকে আসামি করে শৈলকুপা থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো এটি মামলা হিসেবে নেয়নি।
শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগকারীরাই বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মেটানোর চেষ্টা করছেন। এ জন্য তা আর মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।