গ্রিলের ফাঁকে আটকে যাওয়া কুকুরটি উদ্ধার করলেন তাঁরা

গ্রিলের ফাঁকে আটকে যাওয়া কুকুর।
ছবি: সংগৃহীত

কুকুরটি একটি বাসার সীমানাপ্রাচীরের গ্রিলের ফাঁক দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে আটকে যায়। শরীরের বেশির ভাগ অংশ ফাঁক গলে বেরিয়ে গেলেও আটকে যায় পেছনের অংশ। ঝুলে থাকা অবস্থায় কুকুরটির চেঁচামেচিতে পথচারীরা এসে সেটিকে উদ্ধার করেন।

ঘটনাটি ঘটেছে আজ শনিবার সকাল নয়টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের বনশ্রী আবাসিক এলাকার একটি সড়কে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল হলেও পাড়ার সড়কটি তখনো সচল হয়ে ওঠেনি। কিছু কাজের লোক ও পথচারীরা কেবল আসা-যাওয়া শুরু করেছে। এ রকম সময়ে হঠাৎ একটি কুকুরের আর্তচিৎকারে অনেকেই ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, চিকিৎসক এম এ আহাদের বাসার সীমানাপ্রাচীরের গ্রিলে একটি কুকুর আটকে পড়েছে।

দেয়ালের ভেতরে কুকুরটির পেছনের অংশ এবং বাইরের দিকে সামনের অংশ ঝুলে আছে। কুকুরটি অবিরাম চিৎকার-চেঁচামেচি করছে। হয়তো কোনো কারণে এই গ্রিলের সংকীর্ণ ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে গিয়ে আটকে গেছে। ওই সময় এই পথ দিয়ে বাইসাইকেলে করে মো. সামাদ নামের এক নির্মাণশ্রমিক কাজের গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। কুকুরটির এই অসহায় অবস্থা দেখে তিনি এগিয়ে যান।

গ্রিলের ফাঁকে আটকে যাওয়া কুকুরটি উদ্ধার করছেন কয়েকজন।
ছবি: সংগৃহীত

মো. সামাদ দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে সিমেন্টের একটি খালি বস্তা দিয়ে কুকুরটির পেছনের দুই পা ধরে টানতে থাকেন। কিন্তু কুকুরটি সামনের দিকে ঝুলে থাকায় বের করা সম্ভব হচ্ছিল না। এ সময় কুকুরটির আর্তনাদ এবং উদ্ধারকারীর চেষ্টা দেখে আরও দু-তিনজন পথচারী এগিয়ে আসেন। পথচারীরা কুকুরের সামনের দিকে বুকের নিচে বাঁশ দিয়ে ঠেস দিয়ে ওপরের দিকে তুলে ধরেন। এতে কিছু সময়ের মধ্যে কুকুরটি পেছনের দিক দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে মুক্তির আনন্দ নিয়ে দৌড়ে পালায় কুকুরটি। এই উদ্ধারকাজে সময় লেগেছে প্রায় ১০ মিনিট। কুকুরটি ২০ মিনিটের মতো ওই স্থানে আটকে ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনাস্থলের কাছের বাসিন্দা উদ্যোক্তা ও পরিবেশকর্মী সোনিয়া মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হঠাৎ শুনি একটি কুকুর চেঁচামেচি করছে। তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে বারান্দায় গিয়ে দেখি পাশের বাসার গ্রিলের ফাঁকে কুকুরটি বেকায়দায় আটকে গেছে। কুকুরের চিৎকারে মানুষজন আসতে শুরু করেছেন। তখন একজন শ্রমিক প্রথম এগিয়ে যান। তাঁর সঙ্গে আরও তিনজন যোগ দেন। এভাবেই ১০ মিনিটের মধ্যে তাঁরা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করে কুকুরটিকে বের করে আনেন।’

সোনিয়া মান্নান বলেন, ‘ঘটনাটি দেখে মনে হয়েছে, আসলে মনুষ্যত্ববোধই মানুষকে অনন্য করেছে। তাঁদের এই কাজে সকালবেলায় মনটা ভালো হয়ে গেল।’