গ্রেপ্তার আরও চার, ঘটনাস্থলে নাগরিক প্রতিনিধিদল

সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন ঢাকার নাগরিক প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। আজ শনিবার সকালে সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে
ছবি: প্রথম আলো

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলায় নোয়াগাঁও গ্রামে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আজ শনিবার পুলিশ আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে শাল্লার ঘটনায় গ্রেপ্তার হলেন ৩৮ জন।

এদিকে শনিবার সকালে ঢাকা থেকে আসা একটি নাগরিক প্রতিনিধিদল শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রাম পরিদর্শন করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের সঙ্গে কথা বলে। পরে তারা ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়।

১৭ মার্চ বুধবার শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামের এক যুবকের ফেসবুকে পোস্টকে কেন্দ্র করে পাশের তিন গ্রামের মানুষ ওই গ্রামে হামলা চালায়। এ ঘটনায় পরদিন থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়। এ ছাড়া ফেসবুক পোস্টদাতা নোয়াগাঁও গ্রামের ঝুমন দাশের বিরুদ্ধে থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে।

ঢাকা থেকে আসা নাগরিক প্রতিনিধিদলে ছিলেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির নারীবিষয়ক সম্পাদক তনিমা সিদ্দিকী, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) নির্বাহী পরিচালক রফিক আহমেদ, ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট ডেভেলপমেন্টের (আইইডি) প্রতিনিধি হরেন্দ্র নাথ সিং, আদিবাসী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের নেতা পারভেজ আহমেদ, ডেইলি অবজারভারের প্রতিবেদক বনানী মল্লিক, দৈনিক সমকালের প্রতিবেদক জাহিদুর রহমান।

প্রতিনিধিদলের সমন্বয়ক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, এই হামলার ঘটনায় সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে। এখানে দীর্ঘদিনের যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, মানুষে-মানুষে সম্পর্ক ও বন্ধন, সেই আস্থা ও বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে। এ রকম ঘটনা আর যাতে না ঘটে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সবাইকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। রোবায়েত ফেরদৌস মামলার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এ ঘটনায় তিনটি গ্রামের মানুষের ওপর মামলা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি কয়েক হাজার। প্রশাসনের খেয়াল রাখতে হবে, কোনো নিরপরাধ মানুষ যেন গ্রেপ্তার ও হয়রানির শিকার না হয়। পুলিশ যেন গ্রেপ্তার–বাণিজ্য না করে।

প্রশাসনের অবহেলার কারণে হামলার ঘটনা ঘটেছে অভিযোগ করে রুহিন হোসেন বলেন, এর দায় পুলিশ, প্রশাসনকে নিতে হবে। এই হামলা পরিকল্পিত। দোষী প্রত্যেক ব্যক্তিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।