ঝিনাইদহে ঘর দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা আত্মসাৎ

কয়েকজন ভুক্তভোগী ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যদের বিরুদ্ধে সরকারি ঘর দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে (ইউএনও) লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ওই ইউপি সদস্যের নাম রাশেদুল ইসলাম। তিনি কালীগঞ্জের কাষ্টভাঙ্গা ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের সাতগাছিয়া গ্রামের অন্তত ১৯ জনের কাছ থেকে ১৩ হাজার করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে রাশেদুল ইসলাম এই টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি দাবি করেন, কেউ তাঁর হাতে টাকা দিয়েছেন, এমন প্রমাণ দিতে পারবেন না।

ভুক্তভোগী ১৩ জন ৪ জানুয়ারি ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। এতে বলা হয়েছে, প্রায় এক বছর আগে ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম তাঁদের সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলেন। তিনি জানান, একটি ঘর পেতে ২২ হাজার টাকা দিতে হবে। টাকা জমা নেওয়ার জন্য গ্রামের কামরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কামরুল তাগাদা দিয়ে টাকা উঠান। পরে তাঁদের উপস্থিতিতে কয়েকজনের টাকা ইউপি সদস্যদের হাতে তুলে দেন।

লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, টাকা দেওয়ার ছয় মাস পরও তাঁরা ঘর পাননি। তখন তাঁরা ইউপি সদস্য রাশেদুলকে তাগাদা দিতে থাকেন। ৮-৯ মাস পর তাঁরা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানান। কিন্তু এতেও কোনো কাজ হয়নি।

সম্প্রতি সাতগাছিয়া গ্রামে গিয়ে কথা হয় রাশিদা বেগমের সঙ্গে। তাঁর স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে থাকেন। রাশিদা বেগম বাবার বাড়িতে ঝুপড়িতে থাকেন। রাশিদা বলেন, যে ঘরে থাকেন, সেখানে বাস করা যায় না। বর্ষার সময় পানি আর শীতে বাতাসের কষ্ট। ঘর পাওয়ার আশায় ধার করে ইউপি সদস্যদের কাছে ১৩ হাজার টাকা দিয়েছেন। এক বছর পার হলেও ঘর পাননি। টাকাও ফেরত পাচ্ছেন না।

কামরুল ইসলাম বলেন, ইউপি সদস্য রাশেদুলকে টাকা দিতে তিনি সবাইকে উৎসাহিত করেছেন। তিনি মধ্যস্থতা করে টাকাও দিয়েছেন। এখন কেউ ঘর পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে ইউপি সদস্য রাশেদুল ইসলাম বলেন, তিনি নিজে হাতে কোনো টাকা নেননি। শুনেছেন, কামরুল ইসলাম কারও কারও কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। যাঁরা টাকা নেওয়ার অভিযোগ করেছেন, তাঁদের জমির কাগজপত্র নেওয়া হয়েছে ঘর দেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যে সেই তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে।

কাষ্টভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন খান বলেন, ‘শুনেছি, রাশেদুল মেম্বার নাকি টাকা নিয়েছেন। কয়েকজন আমার কাছে অভিযোগও করেছিলেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য ইউ সদস্যকে বলেছিলেন।’

এ বিষয়ে ইউএনও সুবর্ণা রানী সাহা বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।