ঘরে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ মামলায় যুবলীগ নেতা রিমান্ডে

ধর্ষণ
প্রতীকী

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রীকে (২৫) অস্ত্রের মুখে ধর্ষণ ও বসতঘর থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় করা পৃথক মামলায় গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান ওরফে শরীফের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে নোয়াখালীর ৭ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাঈদিন নাঁহিন এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা চাটখিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন আদালতে আসামি মজিবুর রহমানকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করেন। দুপুরে আদালতে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিকেলে আদালত ধর্ষণ মামলায় তিন দিন ও অস্ত্র-গুলি উদ্ধারের মামলায় এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিকে চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাঁর বসতঘর থেকে বুধবার রাত আটটার দিকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি ল্যাপটপ, একটি বিয়ারের খালি ক্যান, পাঁচটি মুঠোফোন ও বেশ কিছু কনডম উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই চাটখিল থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়।
বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে চাটখিল উপজেলায় দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে অস্ত্রের মুখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে।

ওই নারীর অভিযোগ, মজিবুর রহমান তাঁকে ধর্ষণ করেই ক্ষান্ত হননি, মুঠোফোনে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ও স্থিরচিত্র ধারণ করে রাখেন। ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য তাঁকে হুমকিও দিয়েছেন।

অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান নোয়াখোলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। বুধবার ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দুপুরে ওই নারী বাদী হয়ে থানায় মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। বেলা দুইটার দিকে চাটখিল থানার পুলিশ তাঁকে একই ইউনিয়নের ইয়াছিন বাজার থেকে গ্রেপ্তার করে।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে এর আগে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি দিনগত রাতে পুলিশ পরিচয়ে ঘরে ঢুকে এক কিশোরীকে (১৬) তুলে নিয়ে একটি বাগানে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই ধর্ষণের ঘটনায় কিশোরী বাদী হয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি থানায় মজিবুরসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। তিন দিন ঘোরানোর পর পুলিশ প্রধান অভিযুক্ত মজিবুর রহমানকে বাদ দিয়ে ধর্ষণের মামলাটি রেকর্ড করে। ওই ঘটনার পর থেকে মজিবুর এলাকায় আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।

চাটখিল পৌরসভার মেয়র ও যুবলীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ উল্যাহ পাটোয়ারী প্রথম আলোকে বলেন, যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের একটি অভিযোগ শোনার পর জরুরি বৈঠক ডেকে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কোনো অপরাধীর দায় দল নেবে না বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন