ঘুরতে গিয়ে মৃত্যু, পর্যটনে কড়াকড়ি

হাওরে এভাবে দল বেঁধে মোটরসাইকেলে করে ঘোরাঘুরি হরহামেশাই দেখা যায়। কে কার আগে যাবে, সেই প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। মাঝেমধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। শনিবার কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে হাওরের অলওয়েদার সড়কে
ছবি: প্রথম আলো

কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে আজ রোববার মোটরসাইকেলে করে ঘুরতে বেরিয়েছিল তিন কিশোর। প্রাইভেট কারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে তাদের একজন নিহত হয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছে অপর দুজন।

এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে জেলায় হাওরে গোসলে নেমে এক যুবক মারা গেছেন। এক দিনের ব্যবধানে দুটি দুর্ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে প্রশাসনকে। এ অবস্থায় কাল সোমবার থেকে হাওরে সব ধরনের গাড়ি প্রবেশসহ পর্যটকদের বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।

কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঈদের দিন থেকেই অসংখ্য মানুষ হাওরে ঘুরতে ও নির্মল বাতাস উপভোগ করতে আসে। তবে এক দিনের ব্যবধানে দুটি দুর্ঘটনা খুবই দুঃখজনক। সে জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা আগে চিন্তা করতে হবে।

এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে কয়েকটি পদক্ষেপের কথা বলেছেন পুলিশ সুপার। হাওর অধ্যুষিত উপজেলা করিমগঞ্জ, ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের প্রবেশপথে চারটি তল্লাশিচৌকি করা হবে। হাওরে আগে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় তেমন কড়াকড়ি ছিল না। এবার থেকে কড়াকড়ি করা হবে। উপযুক্ত কারণ ছাড়া হাওর এলাকায় কোনো গাড়ি ঢুকতে দেওয়া হবে না। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা এড়াতে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও হেলমেট ব্যবহার করতে হবে। অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব কার্যক্রম কাল সোমবার থেকেই বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।

আজ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কিশোরের নাম স্বনম (১৭)। সে কিশোরগঞ্জ সদরের বৌলাই ইউনিয়নের রাজকুন্তী গ্রামের আবদুল হাইয়ের ছেলে। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অলওয়েদার সড়কে মিঠামইন উপজেলার ঢাকী সেতু এলাকার পাশে ওই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, প্রাইভেট কারটি ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক হয়ে ইটনা উপজেলার দিক থেকে মিঠামইন উপজেলার দিকে যাচ্ছিল।

অন্যদিকে স্বনম ও তার দুই বন্ধুকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি বিপরীত দিকে যাচ্ছিল। ঢাকী সেতুর কাছে দুটি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মারা যায় মোটরসাইকেলের আরোহী স্বনম। গুরুতর আহত তার দুই বন্ধুর পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুজনকে উদ্ধার করে মিঠামইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির রব্বানী বলেন, গুরুতর আহত দুজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।