‘ঘুষি দিয়ে স্ত্রীকে মেরে’ থানায় ধরা দেওয়া যুবকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

‘রাগের মাথায় ঘুষি দিয়ে স্ত্রীকে মেরেছি’ থানায় গিয়ে এমন কথা বলে পুলিশের কাছে ধরা দেওয়া যুবক মোহাম্মদ সাহিদ আহমদের (২৭) বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মোগলাবাজার থানায় তাঁর শাশুড়ি হাজেরা খানম বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি করেন। মামলায় সাহিদকে একমাত্র আসামি করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাহিদ তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ গুম করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুদ্দোহা বলেন, সাহিদের ভাষ্য শুনে পুলিশ তাঁকে আটক করে বাড়িতে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেবেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে সিলেট নগরের মোগলাবাজার থানায় গিয়ে সাহিদ আহমদ আত্মসমর্পণ করেন। তখন তিনি পুলিশকে বলেন, ‘রাগের মাথায় ঘুষি দিয়ে স্ত্রীকে মেরেছি।’ নিহত ওই গৃহবধূর নাম লাকি বেগম (২৫)। খবর পেয়ে রাতে মোগলাবাজার থানার একদল পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।


বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে নগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিটি সার্ভিস এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সাহিদ আহমদের বাড়ি সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কুচাই ইউনিয়নের শ্রীরামপুরে। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তাঁর তলপেটে ও বুকের এক পাশে কয়েকটি ঘুষি দেন তিনি। ঘটনাস্থলেই তাঁর স্ত্রী মারা যান। স্ত্রী মারা যাওয়ার অনুশোচনা থেকে সাহিদ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের পাঁচ মাস বয়সী এক মেয়ে আছে। সাহিদ পেশায় ফটোগ্রাফার।

লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, ওই গৃহবধূর শরীরে এলোপাতাড়ি ঘুষির জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। দাম্পত্য কলহের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সাহিদের বাড়ি মোগলাবাজার থানা এলাকার শ্রীরামপুর দক্ষিণপাড়ায়। হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার আলীনগর গ্রামের বাসিন্দা লাকির সঙ্গে প্রায় দেড় বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়েছিল। লাকির মা হাজেরা খানম দাবি করেন, বিয়ের পর থেকে পারিবারিক বিষয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলছিল। প্রায় সময়ই লাকিকে সাহিদ মারধর করতেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বুধবার রাতে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জেরে বৃহস্পতিবার সকালে ও দুপুরে আরেক দফা ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে সাহিদ শোবার ঘরে লাকিকে আটকে রেখে এলোপাতাড়িভাবে কিল–ঘুষি মারতে থাকেন। লাকি তখন বিছানায় লুটিয়ে পড়লে সাহিদ বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে আবার বাড়িতে ফিরে স্ত্রীর লাশ ড্রামে লুকিয়ে গুম করার চেষ্টা করেন। এ কাজে করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।