চরফ্যাশন পৌরসভার সব সড়কে গর্ত, ভোগান্তি

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রবেশপথে (হাসপাতাল সড়ক) অসংখ্য গর্ত। এ সড়কে যখন রোগী নিয়ে কোনো যানবাহন আসে, তখন প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে রোগীর অবস্থা আরও কাহিল হয়ে পড়ে। বিশেষ করে প্রসূতির ভোগান্তি বেড়ে যায়।
শুধু হাসপাতাল সড়ক নয়, পৌরসভার প্রায় ৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক বেহাল হয়ে পড়েছে। এসব সড়কে চলাচল করতে গিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছে পৌরসভার বাসিন্দারা।

চরফ্যাশন পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার সড়ক রয়েছে ৯০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৫০ কিলোমিটার পাকা। উপকূলীয় শহর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাসের অপেক্ষায় আছে। সেটি পাস হলে কাঁচা সড়ক পাকা হবে। পাকা সড়কও সংস্কার করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পৌরসভার মান্দারতলী খালপাড় সড়ক, চামেলীপাড়া, জানুমুন্সি চৌমহনী, আসলামপুর-পৌরসভা সীমানা সড়কে বড় বড় গর্ত। খালের দিকের বেশির ভাগ সড়ক দেবে গেছে। উত্তর বাজার লঞ্চঘাট খালের একপাশের সড়ক পুরোটাই ভাঙা। সড়কের পিচ উঠে গেছে।

হাসপাতাল সড়কটি যেমনি ভাঙা, তেমনি যানজট লেগে থাকে। এতে মুমূর্ষু রোগী ও প্রসূতিদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যানজটমুক্ত করতে কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। মেয়রকে তিনি সড়কের দুরবস্থার কথা জানিয়েছেন। মেয়র দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন।
শোভন কুমার বসাক, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চরফ্যাশন, ভোলা

সড়ক খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে আসতে রোগীদের প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ সম্পর্কে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শোভন কুমার বসাক বলেন, হাসপাতাল সড়কটি যেমনি ভাঙা, তেমনি যানজট লেগে থাকে। এতে মুমূর্ষু রোগী ও প্রসূতিদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যানজটমুক্ত করতে কয়েকবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। মেয়রকে তিনি সড়কের দুরবস্থার কথা জানিয়েছেন। মেয়র দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও এখনো কাজ শুরু হয়নি।

শরীফপাড়ায় কথা হয় অটোরিকশার চালক আবু সুফিয়ানের সঙ্গে। তিনি বলেন, সড়ক সংস্কার নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই। কিন্তু পৌরসভার টোল আদায়কারীরা শহরে ঢুকতেই প্রতিদিন ২০ টাকা চাঁদার রসিদ ধরিয়ে দেন। ভোগান্তি বাড়ছে চলাচলকারীদের।

ভোগান্তির কথা জানালেন ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আসলাম বাবুল। তিনি বলেন, ভাঙা সড়কের কারণে প্রতিনিয়ত যানবাহনের যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কে যেতে সময় লাগে বেশি। রিকশা ও অটোরিকশাও ভাড়া বেশি নিচ্ছে।

পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আক্তার হোসেন জানান, তাঁর এলাকার নবাব সিরাজুদ্দৌলা সড়কের ৬১০ মিটার, উত্তর-দক্ষিণ ভদ্রপাড়া সড়কের ৯১৫ মিটারসহ এলাকার ৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করতে হবে। এ ছাড়া ৬১০ মিটার কাঁচা সড়ক পাকাকরণ এবং ৫ কিলোমিটার সড়ক নতুন করে নির্মাণ করতে হবে।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তরিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর ওয়ার্ডে মতিন সড়ক, শামিম সড়ক, খালপাড়ে ভাসানী সড়ক, নুরু মুন্সি সড়ক, খলিফা সড়কসহ ছয়-সাত কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করতে হবে। সম্প্রতি অনেকগুলো সড়ক সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

উপকূলীয় শহর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সড়ক সংস্কার ও পাকাকরণের পরিকল্পনা করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। এ সম্পর্কে মেয়র বাদল কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, ‘পৌরবাসী সব ধরনের ট্যাক্স পরিশোধ করেছে। আশা করি, প্রকল্পটি দ্রুত পাস হবে। রাস্তার কাজও তাড়াতাড়ি শুরু করা সম্ভব হবে।’