চলন্ত ট্রেনে জন্ম হলো মেয়েটির, নাম মিতালী

নবজাতক মিতালীকে নিয়ে হাসপাতালে মুক্তি-মনসুর দম্পতি। রোববার দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে
প্রথম আলো

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার ভুমরাদহ হাজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষক মনসুর আলী ও মুক্তি পারভিন দম্পতি। অন্তঃসত্ত্বা মুক্তির চিকিৎসা হতো দিনাজপুর মিশন হাসপাতালে। আগামী ৮ এপ্রিল তাঁর সন্তান জন্ম দেওয়ার তারিখ ছিল। স্ত্রীকে নিয়ে আজ রোববার ট্রেনে চেপে মনসুর যাচ্ছিলেন চিকিৎসকের পরামর্শের জন্য। কিন্তু হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি। তার আগেই ট্রেনে মুক্তি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। ট্রেনের কর্মকর্তারা নবজাতকের নাম রাখেন মিতালী।

সকালে পঞ্চগড় থেকে ঢাকাগামী দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের শোভন শ্রেণির ‘ঙ’ বগিতে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে মুক্তি পারভিন ও নবজাতক দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আছেন।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা পারভেজ সোহেল রানা বলেন, মা ও নবজাতক ভালো আছেন। গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন। নবজাতকের ওজন হয়েছে আড়াই কেজি। দুই-একদিনের মধ্যে তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হবে। মাকে প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং নবজাতককে নতুন জামা-কাপড় উপহার দেওয়া হয়েছে।

মুক্তি পারভিনের স্বামী মনসুর আলী বলেন, ‘এটা আমাদের দ্বিতীয় মেয়ে সন্তান। মেয়ে হওয়ায় আমরা খুব খুশি। ডাক্তার দেখাতে সকাল সাড়ে ৯টায় পীরগঞ্জ স্টেশনে ট্রেনে উঠি। পরের স্টেশনে (সেতাবগঞ্জ) মুক্তির ব্যথা শুরু হয়। মঙ্গলপুর স্টেশনে পৌঁছানোর পরই সন্তানের জন্ম হয়।’ মনসুর বলেন, ট্রেনের যাত্রীরা তাদের খুব সহযোগিতা করেছে। স্টেশনের কর্মকর্তারা, হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘স্টেশনের কর্মকর্তারা আমার মেয়ের নাম রেখেছে মিতালী। নামটি আমাদের পছন্দ হয়েছে। মেয়ের এই নাম আমরা পরিবর্তন করব না।’

দিনাজপুর স্টেশন সুপারিনটেনডেন্ট এবিএম জিয়াউর রহমান বলেন, মুক্তির সন্তান জন্মদানের বিষয়টি জেনে অ্যাম্বুলেন্সসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে রাখা হয়। ট্রেন দিনাজপুরে পৌঁছানোর পর মা ও নবজাতককে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনা বাংলাদেশ রেলওয়ে লালমনিরহাট বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শাহী সুফি নুর মোহাম্মদকে জানালে তিনি নবজাতক মেয়েটির নাম মিতালী রাখেন। প্রসঙ্গত সম্প্রতি বাংলাদেশের চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ির মধ্যে চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হয় মিতালী নামের ট্রেনের। ট্রেনের নামে নবজাতকের নাম রাখা হলে পরিবারও রাজি হয়।