চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথের নরসিংহপুর ঘাটে পণ্যবাহী গাড়ির জট

আজ দুপুরে ঘাটে ছয় শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি ফেরির অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে
ছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথের নরসিংহপুর ফেরিঘাটে পণ্যবাহী ট্রাকের জট সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার থেকে ওই ঘাটে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। এতে চট্টগ্রাম অঞ্চলে যাওয়ার জন্য তরমুজ ও পেঁয়াজবাহী অনেক ট্রাক ঘাটে আটকা পড়েছে।

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখী মানুষের চাপ বাড়ায় বিকল্প পথে যাওয়ার জন্য পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে চালকেরা নরসিংহপুর ঘাটে আসছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘাটে ছয় শতাধিক পণ্যবাহী গাড়ি ফেরির অপেক্ষায় থাকতে দেখা গেছে। চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেরিতে ওঠার জন্য অনেকে দুই–তিন দিন ধরে অপেক্ষা করছেন।

বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথের নরসিংহপুর ফেরিঘাটের অবস্থান ভেদরগঞ্জ উপজেলায়। এ নৌপথ ব্যবহার করে চট্টগ্রাম বিভাগের সঙ্গে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করে। পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি পারাপারের জন্য এ নৌপথে সাতটি ফেরি চলাচল করে। এর মধ্যে গত রোববার একটি ফেরি বিকল হয়।

বাংলাবাজার-শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ঈদ শেষে কর্মস্থলমুখী মানুষের চাপ বেশি থাকায় গত শনিবার থেকে যাত্রীবাহী বাস এ নৌপথের ফেরিতে পারাপার হচ্ছে। আর ঈদের ছুটি শেষ হলে তরমুজ ব্যবসায়ী ও চাষিরা চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন মোকামে তরমুজ পাঠাতে শুরু করেছেন। এতে ফেরিঘাটে শতাধিক তরমুজবাহী গাড়ি আটকা পড়েছে।

বাগেরহাট থেকে তরমুজ নিয়ে চট্টগ্রাম যাচ্ছেন ব্যবসায়ী মোদাচ্ছের হোসেন। তিনি রোববার সন্ধ্যার পর ফেরিঘাটে পৌঁছান। এরপর দুই দিনেও তিনি ফেরিতে উঠতে পারেননি। মোদাচ্ছের হোসেন বলেন, ‘তরমুজ নিয়ে ঘাটে বসে আছি। বাজার ধরতে পারছি না। আজ রাতের মধ্যে ফেরি পার হতে না পারলে তরমুজে পচন ধরবে। আমি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।’

সাতক্ষীরার থেকে পেঁয়াজ নিয়ে চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ যাবেন ট্রাকচালক বেলায়েত হোসেন। তিনি রোববার দুপুরে নরসিংহপুর ঘাটে পৌঁছান। ঘাটে গাড়ির দীর্ঘ সাড়ি থাকায় ফেরিতে ওঠতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘ঘাটেই তিন দিন পার করে দিলাম। আমরা একসঙ্গে আট ট্রাক পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছি। বারবার মোকাম থেকে ফোন আসছে, দ্রুত যেতে বলছে। কিন্তু আমরা কীভাবে দ্রুত যাব?’

নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ইজারাদার জিতু মিয়া ব্যাপারী বলেন, বৃষ্টিতে সড়কের খানাখন্দে কাদা জমে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। তারপর ঘাটে এসে তিন-চার দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ট্রাকচালকদের অসহনীয় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। চালকদের থাকা-খাওয়ার কষ্ট হচ্ছে।

নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আবদুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের ছুটি শেষে মানুষ কর্মস্থলে ফেরায় বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া ঘাটে চাপ পড়েছে। এ জন্য পণ্যবাহী ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসগুলো এ ঘাটে চলে এসেছে। ৬-৭টি ফেরি দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ যানবাহন পারাপার করা যায়। কিন্তু এখন প্রতিদিন ঘাটে ৫০০-৬০০ গাড়ি আসছে। এ কারণে কিছু গাড়ি ঘাটে আটকা পড়েছে। তবে আজ যাত্রীবাহী গাড়ির চাপ কমায় পণ্যবাহী ট্রাক বেশি পার হচ্ছে।