চাঁদপুরে গভীর রাতে ফেরি করে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ

ইলিশ মাছ
ফাইল ছবি

চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ উপজেলায় কয়েক দিন ধরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গ্রামে ফেরি করে মা ইলিশ বেচাকেনা করার অভিযোগ উঠেছে। এতে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার সুফল পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সাত–আট দিন ধরে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী বাহাদুরপুর, ছেংগারচর, আমিরাবাদ, ছটাকি, এখলাশপুর ও মোহনপুর এবং মতলব দক্ষিণ উপজেলার চরমুকুন্দি, কাজিরবাজার, নবকলস, বরদিয়া, মুন্সীর হাট গ্রামে জেলে ও মাছ বিক্রেতারা রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ফেরি করে মা ইলিশ বিক্রি করছেন।

পুলিশ ও প্রশাসনের লোকজনের নজর ফাঁকি দিতে রাত ১০টা থেকে সকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত বিক্রেতারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে মা ইলিশ বিক্রি করছেন। এ সুযোগে ক্রেতারাও কম দাম পেয়ে ইলিশ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বিক্রি শেষে দ্রুত কেটে পড়ছেন বিক্রেতারা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাহাদুরপুর এলাকার এক মাছ বিক্রেতা বলেন, স্থানীয় এক জেলের কাছ থেকে ইলিশ কিনে তিনি ফেরি করে গোপনে বিক্রি করছেন। এক কেজি ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায়, আরেকটু কম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ৬০০ থেকে ৭০০ এবং ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ইলিশ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করছেন।

মতলব দক্ষিণের নবকলস এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘গত রোববার রাতে এক জেলের কাছ থেকে সাড়ে তিন কেজি ইলিশ কিনছি। দাম কম, তাই কিনলাম। হুনছি, রাতে বিভিন্ন গ্রামেই এ রকম ইলিশ বিক্রি হচ্ছে।’

জানতে চাইলে মতলব সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক সাইফুল ইসলাম বলেন, মা ইলিশ নিধন ও বিক্রি বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে প্রত্যাশিত হারে ইলিশ উৎপাদন হবে কি না, এ নিয়ে সন্দেহ আছে।

ইলিশের প্রজনন মৌসুম নির্বিঘ্ন করতে দেশের সব নদ-নদী ও বঙ্গোপসাগরে ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে ৪ অক্টোবর। ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা চলবে।
মতলব দক্ষিণ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলা সত্ত্বেও কিছু অসাধু জেলে ইলিশ ধরে বিক্রি করছেন। অবৈধভাবে ইলিশ বেচাকেনা বন্ধে শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এ প্রসঙ্গে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান বলেন, প্রতিদিনই ইলিশ রক্ষায় অভিযান চলছে। অভিযানের সময় ইলিশ, জাল, ট্রলার জব্দ করা হচ্ছে। মামলাও দেওয়া হচ্ছে। এরপরও ইলিশ ধরা ও বিক্রি থেমে নেই।