চাঁদা না দেওয়ায় মারধর, ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সদস্যের বিরুদ্ধে এক ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাঁদা না পেয়ে ওই ছাত্রলীগ সদস্য এক শ্রমিককে পিটিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে নগরের বহরমপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা করেছেন। ওই ছাত্রলীগ সদস্যের নাম আল ইমরান। তিনি মহানগর ছাত্রলীগের সদস্য। তাঁর বাড়ি নগরের বহরমপুর এলাকায়। আর এ ঘটনায় মামলা করেছেন নগরের বহরমপুর এলাকার ঠিকাদার ইয়াসিন আরাফাত।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ জানুয়ারি রাজপাড়া থানাধীন বহরমপুর শেষ মাথায় একটি মালিকানাধীন নবনির্মিত বিল্ডিংয়ের কাজ কোটেশনের মাধ্যমে পান ওই এলাকার ঠিকাদার ইয়াসিন। ২৬ জানুয়ারি তিনি সেখানে কাজ শুরু করেন। কাজ শুরুর দিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আল ইমরানসহ অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন তাঁর কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ইয়াসিন এই টাকা না দিলে বিল্ডিংয়ের কাজে ব্যবহৃত মেশিনপত্র ভেঙে দেবেন বলে হুমকি দেন তাঁরা। তিনি ইমরানের কথামতো চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ইয়াসিনকে হুমকি দেওয়া হয় এবং সাত দিনের সময় দিয়ে চলে যান। পরে গত বুধবার বিকেলে ইমরান বিল্ডিংয়ে কর্মরত শ্রমিক সোহেলের কাছে জানতে চান, ‘ইয়াসিন কোথায়, আমাদের চাঁদা না দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে, কাজ বন্ধ রাখো।’ তখন সোহেল কাজ বন্ধ না রাখায় ইমরান তাঁকে রড দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। পরে সোহেলকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর মাথায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

ইয়াসিন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান পরিচয় দিয়ে বলেন, তিনি কোটেশনের মাধ্যমে ওই কাজ নিয়েছেন। ওই দিন বিকেলে শ্রমিক মারধরের কথা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন। এসে পুলিশের ৯৯৯-এ ফোন করেন। পরে গতকাল সকালে রাজপাড়া থানায় তিনি ইমরানের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৮-১০ জনের নামে মামলা করেন। তাঁর দাবি, ওই ছাত্রলীগের সঙ্গে তিনি আগে কখনো কাজ করেননি। কোনো প্রকার লেনদেনও নেই।

তবে আল ইমরান চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি ২ শতাংশ শেয়ারে ইয়াসিনের সঙ্গে অন্য একটি কাজ করেছেন। সেই শেয়ারে তিনি ইয়াসিনের কাছে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পান। গত ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। দিয়েছেন মাত্র দুই হাজার টাকা। সেই টাকা চাওয়ার জন্য তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এখন চাঁদা দাবির অভিযোগ তুলে তাঁকে ফাঁসিয়ে থানায় মামলা দিয়েছেন ইয়াসিন।

শ্রমিক মারধরের বিষয়ে তিনি বলেন, তিনি কাউকে মারধর করেননি। শ্রমিকেরা নিজেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে থাকতে পারেন। এ বিষয়ে তিনি অবগত নন।
এ ব্যাপারে নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় আল ইমরানের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেছেন একজন ঠিকাদার। তাঁরা এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছেন।