চাঁদা না পেয়ে অভয়নগরে ইউপি সদস্যকে হত্যা করে চরমপন্থীরা: পুলিশ

অপরাধ
প্রতীকী ছবি

যশোরের অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উত্তম সরকারকে (৩৮) গুলি করে হত্যা করেছে চরমপন্থীরা। চাঁদার টাকা না পেয়ে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছে যশোর জেলা পুলিশ।

বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ বলেছে, এ ঘটনায় কথিত নিউ বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে এক যুবলীগ নেতাও আছেন। জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুপন কুমার সরকার আজ রোববার বিজ্ঞপ্তির তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার রুদাঘরা গ্রামের ইকরামুল গোলদার ওরফে জুয়েল (১৯), যশোরের অভয়নগরের সুন্দলী গ্রামের প্রজিৎ বিশ্বাস ওরফে বুলেট (৪৬), মনিরামপুর উপজেলার সুজাতপুর গ্রামের পল্লব বিশ্বাস ওরফে সুদিপ্ত (২৪), সাতক্ষীরার শ্যামনগরের দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের প্রশান্ত মণ্ডল (৩৮) ও খুলনার ডুমুরিয়ার দিঘলিয়া গ্রামের বিজন কুমার মণ্ডল ওরফে বিনোদ (৪২)। তাঁদের মধ্যে প্রজিৎ বিশ্বাস সুন্দলী ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি।

পুলিশ জানায়, আসামিরা চরমপন্থী কথিত নিউ বিপ্লবী কমিউনিষ্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এর আগে সরকারের নির্দেশে আত্মসমর্পণ করেন। কিন্তু পুনরায় সংঘবদ্ধ হয়ে নতুন সদস্য সংগ্রহ করে দল গঠনের পর যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর, কেশবপুরসহ আশপাশের জেলার মাছের ঘের দখল, চাঁদাবাজি ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটান তাঁরা।

এরই ধারাবাহিকতায় চরমপন্থীরা উত্তম সরকারের কাছে চাঁদা দাবি করেন। চাঁদার টাকা না পেয়ে তাঁরা উত্তম সরকারকে হত্যা করেন। গত সোমবার রাত সোয়া আটটার দিকে অভয়নগর উপজেলার হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে উত্তম সরকারকে গুলি করা হয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলেই মারা যান। উত্তম সরকার উপজেলার হরিশপুর গ্রামের অশান্ত সরকারের ছেলে।

পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ তাঁদের কাছ থেকে লোহার তৈরি একটি ওয়ান শুটারগান, তিনটি গুলি, দুটি গুলির খোসা, ছয়টি ১২ বোর কার্তুজ, একটি এয়ারগান, একটি ককটেল, ১০ গ্রাম গান পাউডার, ৫০ গ্রাম বোমা তৈরির তারকাঁটা, দুটি মোটরসাইকেল ও পাঁচটি মুঠোফোন উদ্ধার করে।

হত্যার ঘটনার পরদিন গত মঙ্গলবার উত্তম সরকারের স্ত্রী শ্রাবন্তী সরকার বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় মামলা করেন। এতে একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করা হয়। ওই দিন পুলিশ অর্ধেন্দু মল্লিক (৪৫) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে।

জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক শেখ শাহিনুর রহমানের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম হোসেন ও মফিজুল ইসলাম গতকাল শনিবার ও আজ রোববার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা, যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেন।