চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে আসামির মৃত্যুর অভিযোগ

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে মারা যাওয়া মাদক মামলার আসামি সানাউল হক বিশ্বাস
ছবি: সংগৃহীত

জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হেফাজতে থাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোলাহাট থানার মাদক মামলার আসামি সানাউল হক বিশ্বাস (৪৪) গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে মারা গেছেন। তিনি ভোলাহাট উপজেলার চানশিকারী গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনেই তিনি মারা গেছেন। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।

সানাউল হক বিশ্বাসের ছোট ভাই মাসুদ রানা বিশ্বাস বেলা দুইটার দিকে কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের বলেন, বৃহস্পতিবার ইফতার করার পর দোকানে ডিম কিনতে যাওয়ার সময় বাড়ির সামনে থেকে তাঁর ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেখানেই মারধর শুরু করে ডিবি পুলিশ। সেখানে পানি খেতে চাইলেও তাঁকে এক ফোঁটা পানি খেতে দেয়নি। পরে বাড়ির পাশে আমবাগানে নিয়ে গিয়ে আরও মারধর করে। এতেই তাঁর ভাই অসুস্থ হয়ে যান। এ সময় তাঁকে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় পুলিশ। অবস্থা খারাপ হওয়ায় সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে গ্রহণ করেননি। এ নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুবুল আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ১৩ এপ্রিল সানাউল হক বিশ্বাসের বাড়ি থেকে ১৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় ভোলাহাট থানায় মামলা হয়। সানাউল পলাতক ছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ির পাশে একটি আমবাগানে মাদক সেবন করছিলেন তিনি। গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করলে তিনি দৌড়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যান। এতে তিনি বুকে ও হাঁটুতে ব্যথা পান এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন। গোয়েন্দা পুলিশ তাঁকে সেখান থেকে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে একটার দিকে তিনি মারা যান।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে মারা যাওয়া আসামি সানাউল হক বিশ্বাসের লাশ দেখতে এসে হাসপাতালে তাঁর মেয়ে, ভাইসহ স্বজনদের আহাজারি। শুক্রবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল প্রাঙ্গণে
ছবি: সংগৃহীত

নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে মাহবুবুল আলম খান বলেন, পুলিশ তাঁকে নির্যাতনের সময় পেল কোথায়? তাঁকে গ্রেপ্তার করার সময় সেখানে অনেক লোকজন ছিল। সেখান থেকেই তাঁকে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা খারাপ হলে তাঁকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।