চাঁপাইনবাবগঞ্জে নির্যাতনে আসামি মৃত্যুর অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ আদালতের

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মানচিত্র

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাটে ডিবি পুলিশের নির্যাতনে সানাউল হক বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ আদালতের নির্দেশে তদন্তে নেমেছে র‍্যাব। র‌্যাব চাঁপাইনবাবগঞ্জের কোম্পানি কমান্ডার মেজর নাজমুস সাকিব আজ সোমবার প্রথম আলোর কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আজ সোমবার থেকে তদন্ত শুরু হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল আদালত সূত্র জানায়, ভোলাহাট আমলি আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবু কাহার বিভিন্ন সাংবাদমাধ্যমে পুলিশের নির্যাতনে ভোলাহাট উপজেলার চানশিকারী গ্রামের সানাউল হক বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর খবর জানতে পেরে স্বপ্রণোদিত হয়ে এ নির্দেশ দিয়েছেন। নির্যাতনের সময় সানাউল হক পানি পান করতে চাইলেও পুলিশ দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আদালত ৯ মের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন। গতকাল রোববার এ নির্দেশ র‍্যাব-৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারের কাছে পাঠানো হয়।

আদালতের বিচারক নির্দেশে উল্লেখ করেন, বিষয়টি বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫ (৫)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং প্রচলিত আইন ও মানবতাবিরোধী। ওই অপরাধ ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮–এর ১৯০ (১) (গ) ধারা অনুযায়ী আমলে গ্রহণ করা হলো। আদালত ৯ মের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন। গতকাল রোববার এ নির্দেশ র‍্যাব-৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডারের কাছে পাঠানো হয়। আদালতের নির্দেশের এ অনুলিপি চাঁপাইনবাবগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, র‍্যাব-৫ রাজশাহীর অধিনায়ককেও দেওয়া হয়েছে।

গত ২৯ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দিবাগত রাতে ভোলাহাট উপজেলার চানশিকারী গ্রামে নিজ বাড়ির পাশ থেকে মাদক মামলার আসামি ওই গ্রামের মৃত মুরশেদ আলীর ছেলে সানাউল হক বিশ্বাসকে (৪৪) গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারের সময় পালাতে গিয়ে পড়ে গিয়ে বুকে ও হাঁটুতে আঘাত পান তিনি। এ সময় তাঁকে প্রথমে ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে একটার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনের পরিপ্রেক্ষিতে সানাউল হক বিশ্বাসের মৃত্যু হয়।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মাহবুব আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পরদিনই পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমার নেতৃত্বে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার পালের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল মাদক মামলার আসামি সানাউল হককে গ্রেপ্তার করেছিল।