চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশুদের নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়েছে

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বেড়েছে নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালে রোগীদের ভিড়
প্রথম আলো

চাঁপাইনবাবগঞ্জে শিশুদের নিউমোনিয়া ও শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়েছে। ৩ সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিনই ১২০ থেকে ১৩০ শিশু ভর্তি ছিল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালে। অথচ এই হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা মাত্র ১৮টি। শিশুবিশেষজ্ঞ আছেন একজন। ওষুধের সংকটও আছে। সব মিলিয়ে হিমশিম অবস্থা।

হাসপাতালের কনিষ্ঠ শিশুবিশেষজ্ঞ মাহফুজ রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, নিউমোনিয়া ও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর ভিড় এবার অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। রোগীদের সেরে উঠতেও দেরি হচ্ছে। কারও কারও ক্ষেত্রে ৮ থেকে ১৪ দিন লেগে যাচ্ছে। একা এত রোগীর চিকিৎসা দিতে তাঁকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এ অবস্থা চলছে চার সপ্তাহ ধরে। কয়েক দিন ধরে তাঁকে সহায়তা দেওয়ার জন্য একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারকে নিযুক্ত করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের মেঝে, বাইরের করিডর ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডের বাইরে বারান্দায় রোগী ও স্বজনদের উপচে পড়া ভিড়। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ পেরিয়ে যেতেই চোখে পড়ে পাটি ও চাদর বিছিয়ে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে বসে আছেন মায়েরা। স্বজনদের ভিড় ও শব্দের কারণে হাসপাতালের কর্মীরা হ্যান্ডমাইকে বারবার ঘোষণা দিচ্ছেন, ‘শিশুর সঙ্গে মা ছাড়া অন্যরা বাইরে থাকুন। এখন রাউন্ড চলছে।’

শিশু ওয়ার্ডের বাইরের বারান্দায় শিশুকে নিয়ে বসে ছিলেন শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট থেকে আসা কুলসুম। তিনি সাত মাসের শিশুকে ভর্তি করেছেন দুই দিন আগে। একই উপজেলার বিমর্ষী তিন দিন আগে দুই মাসের শিশুকে ভর্তি করেছেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ছাড়াও গোমস্তাপুর, নাচোল, শিবগঞ্জ উপজেলাসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে এসেছেন অভিভাবকেরা।

কয়েক শিশুর অভিভাবক অভিযোগ করেন, বাইরে থেকে ওষুধ কিনতে হচ্ছে।

এই অভিযোগের বিষয়ে হাসপাতালের কনিষ্ঠ শিশুবিশেষজ্ঞ মাহফুজ রায়হান বলেন, রোগীদের অস্বাভাবিক চাপের কারণে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশনটির ৬ মাসের মজুদ মাত্র ১৫ দিনে শেষ হয়ে গেছে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময় শিশুদের নিউমোনিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি থাকে। তবে দুই বছর ধরে এই সংখ্যা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) নাদিম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ওষুধের চাহিদা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। হাসপাতাল ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও ১০০ শয্যার জনবলও পাওয়া যায়নি পুরোপুরিভাবে। তাই চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।