চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম হতে পারে অন্যতম রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য: কৃষিমন্ত্রী

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকায় ব্রি ধান-৮১ জাতের ধান কাটা অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও অন্যরা। এরপর মন্ত্রী চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে আমচাষি সমাবেশে যোগ দেন
ছবি: প্রথম আলো

কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি আয় তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। এই খাত পড়ে গেলে বিপদে পড়ব। তখন কৃষিপণ্য রপ্তানির ওপর আমাদের নির্ভর করতে হবে। কৃষিপণ্য বহুমুখীকরণের মাধ্যমে আমাদের রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য উৎপাদনের ওপর জোর দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে আম হতে পারে একটি অন্যতম রপ্তানিযোগ্য কৃষিপণ্য। কেননা, বিশ্বের সেরা সুস্বাদু আম উৎপাদন হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে।’

আজ বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রে (আম গবেষণা কেন্দ্র) বারি আম-৪ ও বারি আম-১১-এর উৎপাদনশীলতা প্রদর্শন ও আমচাষি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশে নানা স্বাদের, নানা গন্ধের আম হয়। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জের ল্যাংড়া, গোপালভোগ কিংবা হিমসাগরের (ক্ষীরশাপাতি) স্বাদে মনটা অন্য রকম হয়ে যায়, সবচেয়ে বেশি তৃপ্ত করে। সব শ্রেণির মানুষকেই আম তৃপ্ত করে। প্রকৃতির এ আশীর্বাদ আপনাদের জন্য গর্বের।’

কৃষিমন্ত্রী আমকে রপ্তানিযোগ্য করতে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁয় ভ্যাপার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের আশ্বাস দেন।

এ সময় কৃষিমন্ত্রী আমকে রপ্তানিযোগ্য করতে তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁয় ভ্যাপার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের আশ্বাস দেন। পরে আমচাষিদের মধ্যে বারি আম-৪ ও বারি আম ১১-এর চারা বিতরণ করেন তিনি।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. নাজিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাংসদ শামিল উদ্দীন আহমেদ, ফেরদৌসী ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আব্দুল ওদুদ, আমচাষি শামীম খান, শরিফা খাতুন প্রমুখ।

ব্রি ধান-৮১ জাতের ধান কাটা অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক ও অন্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার চিনিয়াতলা মহল্লার একটি মাঠে
ছবি: প্রথম আলো

কৃষিমন্ত্রী এর আগে দুপুর ১২টার দিকে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌর এলাকার চিনিয়াতলা মহল্লার একটি মাঠে ব্রি ধান-৮১ জাতের ধান কাটা ও কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তায় অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, চাষযোগ্য জমির পরিমাণ হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন অন্যতম। তবুও সরকার নানা জাতের ফসল ও উন্নত চাষাবাদ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে এসব সমস্যা মোকাবিলা করে যাচ্ছে। ব্রি ধান ৮১ জাতটি উচ্চ ফলনশীল। এর মাধ্যমে ধান উৎপাদন উল্লেখ্যযোগ্য পরিমাণে বাড়বে এবং দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সাংসদ শামিল উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) ঢাকার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, সাবেক সাংসদ জিয়াউর রহমান, গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কমলারঞ্জন দাস, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) ঢাকার মহাপরিচালক কৃষিবিদ মো. আসাদুল্লাহ প্রমুখ।