চাকরি হারিয়ে গ্রামে যাওয়া বিল্লাল আবার ঢাকায় ফিরেছেন

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় বিল্লাল হোসেন আবার পরিবারসহ ফিরে যাচ্ছেন ঢাকায়। বুধবার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় ব্রিজ এলাকায়
প্রথম আলো

রাজধানীর একটি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করতেন মো. বিল্লাল হোসেন (৩৬)। এক বছর আগে করোনা মহামারির কারণে কাজ কমে আসায় প্রতিষ্ঠানটি বেশ কয়েকজন কর্মচারী ছাঁটাই করে। তাঁদের মধ্যে বিল্লাল হোসেন ছিলেন। উপায় না পেয়ে পরিবারসহ তিনি ফিরে যান গ্রামের বাড়ি বরিশালের গৌরনদীতে। সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে এলাকায় ভ্যান চালান।

বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কারখানা খুলে দিয়েছে। বিল্লাল হোসেন একটা চাকরির জন্য ঢাকার বিভিন্ন পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। এক বছরের বেশি সময় গ্রামে থাকার পর একপর্যায়ে একটি রেন্ট-এ কার কোম্পানির চালক হিসেবে চাকরি জোগাড় করেছেন তিনি। ওই চাকরিতে যোগ দিতে গতকাল বুধবার গৌরনদী ছেড়ে আবার রাজধানীর দিকে ছোটেন।

পিকআপে বসে থাকা বিল্লালের স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, ‘গরিবের সংসার। করোনা সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে। এখন করোনা কিছুটা কমে যাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান খুলেছে। তাই আমরাও এক বছর পর আবার শহরে ফিরে যাচ্ছি।’

বুধবার বিকেলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পদ্মার মোড় ব্রিজ পার হওয়ার সময় দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটগামী একটি পিকআপ গাড়ির সামনে চালকের পাশে সহকারীসহ বসা রয়েছেন আরও দুজন। গাড়িতে ঘরের বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখার পর পেছনের দিকে সামান্য একটু জায়গার ওপর কোনোরকম ঘাপটি মেরে বসে আছেন তিনজন। কথা বলতে জানা গেল পেছনের ওই তিনজনের পরিচয় ও তাঁদের জীবনসংগ্রামের গল্প। বিল্লাল হোসেন, তাঁর স্ত্রী শিল্পী বেগম ও বড় ছেলে মো. মোসলেম উদ্দিন একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই ওই পিকআপের পেছনে মালামালের সঙ্গে বসে ঢাকায় যাচ্ছেন। আরেক ছেলে মোহসিন উদ্দিনকে বসিয়েছেন চালকের পাশে।

বিল্লাল হোসেন বলেন, ড্রাইভিং শেখার পর গাড়ি চালানোর জন্য গৌরনদী ছেড়ে ঢাকায় যান। সেখানে একটি ওষুধ কোম্পানির গাড়ি চালকের চাকরি করতেন। গত বছর চাকরি হারান তিনি। চলে যান গ্রামের বাড়ি গৌরনদীতে। চাকরি পেয়ে আবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন। এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিকআপের পেছনে বসা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আলাদা করে যেতে হলে বাড়তি আরও ২-৩ হাজার টাকা খরচ হতো। তাই এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।’

পিকআপে বসে থাকা স্ত্রী শিল্পী বেগম বলেন, ‘গরিবের সংসার। করোনা সবকিছু ওলটপালট করে দিয়েছে। এখন করোনা কিছুটা কমে যাওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান খুলেছে। তাই আমরাও এক বছর পর আবার শহরে ফিরে যাচ্ছি।’