চাকরির কথা বলে যৌনপল্লিতে বিক্রি, সাত মাস পর তরুণী উদ্ধার

প্রতীকী ছবি

রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লি থেকে রোববার ভোরে এক তরুণীকে (১৯) উদ্ধার করেছে গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশ। মুঠোফোনে পরিচয় হওয়া এক যুবক ঢাকায় পোশাক কারখানায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রায় সাত মাস আগে তাঁকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই তরুণী।

এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা হয়েছে। পুলিশ রোজিনা বেগম (২৯) নামের যৌনপল্লির এক বাড়িওয়ালিকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি যৌনপল্লির বাসিন্দা সুমন মণ্ডলের স্ত্রী।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই তরুণীর বাড়ি নাটোর জেলায়। তিনি দরিদ্র কৃষক পরিবারের মেয়ে। তাঁর সঙ্গে অজ্ঞাত এক যুবকের মুঠোফোনে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তরুণী যুবকের কাছে তাঁর পারিবারিক অবস্থার কথা জানান। এরপর সেই যুবক তাঁকে ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। এর সূত্র ধরে ওই যুবকের কথামতো তরুণী গত মার্চে ট্রেনে করে নাটোর থেকে দৌলতদিয়া রেলওয়ে স্টেশনে আসেন। এরপর স্টেশন থেকে কৌশলে ওই তরুণীকে যৌনপল্লির বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগমের কাছে বিক্রি করে পালিয়ে যান ওই যুবক।

বাড়িওয়ালি রোজিনা তাঁকে যৌনপল্লির একটি ঘরে আটকে রেখে জোরপূর্বক দেহব্যবসা শুরু করান। গত সাত মাসে তিনি একাধিকবার যৌনপল্লি থেকে পালানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বরং বাড়িওয়ালির হাতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন। শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ওই তরুণী রোজিনার বাড়ি থেকে কৌশলে বের হয়ে পল্লির বাইরে চলে আসেন। এ সময় রোজিনা ও তাঁর লোকজন তাঁকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। কিন্তু তরুণীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হন। ছুটে আসে পাশে থাকা পুলিশের একটি টহল দল। এরপর পুলিশ তরুণীকে উদ্ধার ও বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল তায়াবীর জানান, উদ্ধার হওয়া তরুণী বাদী হয়ে রোববার দুপুরে বাড়িওয়ালি রোজিনা বেগম ও অজ্ঞাত আরেকজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা করেছেন। আটক রোজিনাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে রাজবাড়ী জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।