চান্দিনায় মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, শিক্ষক গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার চান্দিনায় একটি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে তাঁর মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে (১২) ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই শিক্ষকের নাম মো. ইউসুফ সোহাগ (৪০)। তিনি উপজেলার একটি কওমি মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা। চান্দিনা থানায় ওই ছাত্রীর বাবার করা মামলায় আজ বুধবার দুপুরে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার মাওলানা মো. ইউসুফ সোহাগ দেবীদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি চান্দিনার কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জামে মসজিদের ইমামও।

ওই শিক্ষক অন্তত চারটি বিয়ে করেছেন। এখনো তাঁর দুই স্ত্রী আছেন। কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে শিশু ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে জিম্মি করে ধর্ষণের আরও বহু অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৯ সালে চান্দিনা পল্লী বিদ্যুৎ রোডের ওই মাদ্রাসায় আমার মেয়েকে ভর্তি করাই। গতকাল মঙ্গলবার জানতে পারি, ওই শিক্ষক আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেছেন। ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে আমি বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য ও দেবীদ্বার উপজেলার বাগুর এলাকার বাসিন্দা লিটন সরকারকে বিষয়টি জানাই। তাঁর তৎপরতায় মঙ্গলবার রাতেই ওই শিক্ষকসহ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে প্রশাসন।’

মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত অবস্থায় গত এক মাস আগে ইউসুফ হুজুর (প্রধান শিক্ষক) জোরপূর্বক আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। আমি বিষয়টি আমার অভিভাবককে জানাতে চাইলে তিনি আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখান। পরবর্তী সময়ে তিনি সুযোগ পেলেই আমার সঙ্গে ‘খারাপ কাজ’ করতেন। মঙ্গলবার আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে ঢাকায় নিয়ে যান।
ধর্ষণের শিকার মাদ্রাসাছাত্রী

ওই মাদ্রাসাছাত্রী বলে, ‘মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত অবস্থায় গত এক মাস আগে ইউসুফ হুজুর (প্রধান শিক্ষক) জোরপূর্বক আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। আমি বিষয়টি আমার অভিভাবককে জানাতে চাইলে তিনি আমাকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখান। পরবর্তী সময়ে তিনি সুযোগ পেলেই আমার সঙ্গে “খারাপ কাজ” করতেন। মঙ্গলবার আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে ঢাকায় নিয়ে যান।’

এ প্রসঙ্গে শিশুটিকে উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত লিটন সরকার বলেন, ‘মেয়েটির বাবা মঙ্গলবার আমাকে বিষয়টি অবহিত করলে আমি দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) জানিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করি। ওই শিক্ষক অন্তত চারটি বিয়ে করেছেন। এখনো তাঁর দুই স্ত্রী আছেন। কওমি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে শিশু ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে জিম্মি করে ধর্ষণের আরও বহু অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহিরুল আনোয়ার বলেন, ওই শিক্ষকের বাড়ি দেবীদ্বার হলেও ঘটনাস্থল চান্দিনা থানায়। তাই এ ঘটনায় চান্দিনা থানায় ওই শিশুর বাবা মামলা করেন।

এ বিষয়ে চান্দিনা থানার ওসি শামসউদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ওই মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।