চার জেলেকে নির্যাতন করে নৌকা কেড়ে নিল বিএসএফ

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলা সীমান্তে চার জেলেকে নির্যাতনের পর তাঁদের দুটি নৌকা কেড়ে নিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। নির্যাতনের শিকার জেলেরা বুধবার মধ্যরাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

নির্যাতনের শিকার জেলেরা হলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার গহমাবোনা গ্রামের জমি মোহাম্মদের ছেলে মো. আলম (৪৯), আলমের ছেলে আনোয়ার (২৩), সাইদুর রহমানের ছেলে সিফাত (১৯) ও কসবা গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে সোনারুল (২৮)। তাঁদের মধ্যে আনোয়ারকে বুধবার রাত ২টার দিকে হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

আজ বৃহস্পতিবার পবার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলে রেজবী আল হাসান মুঞ্জিল বলেন, গোদাগাড়ী উপজেলার খরচাকা সীমান্তের বিপরীতে পদ্মা নদীতে মাছ ধরার সময় বুধবার ভোরে ওই চার জেলেকে তিনটি নৌকাসহ ধরে নিয়ে যায় বিএসএফ। ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় ঢুকে মাছ ধরার কারণে তাঁদের ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। চার জেলের শরীরের বিভিন্ন অংশে লাঠির আঘাতের চিহ্ন আছে। নির্যাতনের পর বুধবার সন্ধ্যার দিকে বিএসএফ তাঁদের ছেড়ে দেয়। কিন্তু তাঁদের দুটি নৌকা রেখে দেয়। এরপর তাঁরা বাড়ি ফিরে রাতে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। চেয়ারম্যান বলেন, জেলেরা বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা বানিয়ে থাকেন। একেকটি নৌকার দাম প্রায় দেড় লাখ টাকা। নৌকা দুটি ফেরত পেলে জেলেদের উপকার হতো।

চার জেলেকে ধরে নিয়ে নির্যাতনের ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রাজশাহীর ১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সীমান্তের ওই এলাকায় পদ্মা নদী ভারতীয় এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। মাছ ধরার জন্য ওই জেলেরা ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে ঢুকে পড়েছিলেন। সীমান্তের ভেতরে ঢুকে পড়লেও বিএসএফ তাঁদের গায়ে হাত তুলতে পারে না। এতে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। সীমান্ত অতিক্রম করার প্রমাণ হিসেবে তারা নৌকা দুটি রেখে দিয়েছে।

এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে সীমান্তে পতাকা বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু বৈঠকটি স্থগিত হয়েছে। পরে বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাল শুক্রবার পতাকা বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।