চাল চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আ.লীগ নেতাকে অব্যাহতির সুপারিশ

নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুর রহমান
সংগৃহীত

খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা দরের চাল চুরির অভিযোগ প্রশাসনের তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুর রহমান ওরফে মুকুলকে দলীয় সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

আজ বুধবার বেলা ১১টায় নবীগঞ্জ উপজেলা অডিটরিয়ামে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সমন্বয়ে এক বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এর আগে একই অভিযোগে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন ইমদাদুর রহমান। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল জাহান চৌধুরী।

সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, সভাপতি পদে দলের জ্যেষ্ঠ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন দায়িত্ব পালন করবেন।

বর্ধিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমদ। সভায় নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুর রহমানের বিরুদ্ধে সরকারের ১০ টাকা কেজির চাল আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার বিষয়টি উত্থাপিত হয়। এতে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পরে সর্বসম্মতিক্রমে সংগঠনের সভাপতি ইমদাদুর রহমানকে অব্যাহতির সিদ্ধান্ত নেন উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। সভার সিদ্ধান্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য এ সভা থেকে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগকে সুপারিশ করা হয়েছে। সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, সভাপতি পদে দলের জ্যেষ্ঠ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন দায়িত্ব পালন করবেন।

হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাদালন সম্পাদক মো. আলমগীর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলা কমিটির সুপারিশ আমরা অনুমোদন করে কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিয়েছি। কেন্দ্র এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।’

তবে ইমদাদুর রহমান দাবি করেন, ‘আমি স্থানীয় রাজনীতির শিকার হয়েছি। চাল চুরির অভিযোগ প্রচার থেকে শুরু করে এখন অব্যাহতি সবই দলের ভেতরে আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের ফসল। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’

ইমদাদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর এলাকার ২২৯ জন অসহায় লোকের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ না করে, তা চার বছর ধরে আত্মসাৎ করে আসছিলেন। এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে প্রশাসন তদন্ত করে এর সত্যতা পায়।

ইমদাদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর এলাকার ২২৯ জন অসহায় লোকের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ না করে, তা চার বছর ধরে আত্মসাৎ করে আসছিলেন। এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে প্রশাসন তদন্ত করে এর সত্যতা পায়। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমানকে চেয়ারম্যান পদ থেকে গত ৭ জুলাই সাময়িক বরখাস্ত করে। মন্ত্রণালয়ের এ আদেশের বিরুদ্ধে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করেন।

পরে আদালত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এ আদেশ স্থগিত করেন। এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয় আদালতে আপিল করলে আদালত পুনরায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বরখাস্তের আদেশ বহাল রাখেন। এ কারণে গত ২২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ পুনরায় ইমদাদুর রহমানকে বরখাস্ত করে ও প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ আদেশ গত সপ্তাহে পৌঁছেছে প্রশাসনের কাছে।